যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের আহ্বান
- By Jamini Roy --
- 18 January, 2025
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগে দেশটির তিন সিনিয়র কূটনীতিককে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট, যিনি ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্নিকাট ছাড়া পদত্যাগের আহ্বান জানানো অন্য দুই কূটনীতিক হলেন ডেরেক হোগান ও আলেইনা তেপলিৎজ।
ট্রাম্পের হয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লোকবল ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা এজেন্সি রিভিউ টিম এই তিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে তাদের পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক বহরে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে।
আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই বারবার বলেছেন যে, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে থাকা তথাকথিত ‘ডিপ স্টেট’ বা গভীর প্রশাসনের প্রভাব দূর করবেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যারা তার নীতিকে বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করবেন না, তাদের বরখাস্ত করা হবে।
এই তিন কূটনীতিক ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় সরকারের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সাধারণত, নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সাধারণত তাদের দায়িত্ব চালিয়ে যান।
ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ সংক্রান্ত অন্তর্বর্তী দলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমাদের জাতি ও কর্মজীবী জনগণের কল্যাণকে প্রাধান্য দেওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে কাজ করাটা স্বাভাবিক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান, যারা তার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের নিয়ে একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দল গঠন করতে।’’
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করবে না।’’ পদত্যাগ করতে বলা তিন কূটনীতিকও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।
মার্শা বার্নিকাট ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তার সময়কালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক নীতি এবং প্রশাসনিক সংস্কারের একটি আভাস দেয়। এটি শুধুমাত্র কূটনীতির ক্ষেত্রেই নয়, বরং প্রশাসনিক পরিবর্তনের দিকেও ইঙ্গিত করছে। তবে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রশাসনের ভিতরে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।