নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা
- By Jamini Roy --
- 22 November, 2024
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত এবং হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
২০২৩ সালের ২০ মে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান এই নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। প্রায় ছয় মাস পর, ২১ নভেম্বর, আদালত এই বহুল প্রতীক্ষিত পরোয়ানা জারি করে।
২০২২ সালের ৭ অক্টোবর, হামাস আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে আক্রমণ চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ত গাজা উপত্যকায় সামরিক আগ্রাসনের নির্দেশ দেন। এর ফলে গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে এবং হাজারো প্রাণহানি হয়।
আইসিসির অভিযোগে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ত গণহত্যা, যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ এবং বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্যবস্তু করার মতো অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে, তারা মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রেখে ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো একমত হয়েছে যে, তারা আইসিসির আইন মেনে চলবে এবং প্রয়োজন হলে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করবে। ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো বলেন, “নেতানিয়াহু যদি ইতালিতে প্রবেশ করেন, তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।”
নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়ামও একই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। বেলজিয়াম আরও বলেছে, ইউরোপীয় দেশগুলোর উচিত ইসরায়েলের সঙ্গে সব বাণিজ্যিক চুক্তি বাতিল করা।
তুরস্কও নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। ইরাকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বের সব মুক্ত দেশের উচিত আইসিসির রায় মেনে চলা।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এই পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নাকচ করে দিয়েছে। বাইডেন প্রশাসন বলেছে, “আইসিসি এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও, এর কোনো কার্যকারিতা নেই।”
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডন সার এই পরোয়ানাকে “বিপজ্জনক নজির” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যেসব দেশ আইসিসির এই পদক্ষেপকে সমর্থন করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইসিসির পরোয়ানার পর ইসরায়েল আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। নেতানিয়াহু বাহিনী লেবাননের বালবেক শহরে বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ৪৭ জনকে হত্যা করেছে। হামাসও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। দক্ষিণ লেবাননের খিয়াম গ্রামে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানোর দাবি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের আক্রমণে প্রতিদিন তিনজন শিশু প্রাণ হারাচ্ছে।