Logo

সাহিত্য সংস্কৃতি    >>   রংপুরে সনাতনী সমাবেশে প্রশাসনের বাধা ও মাহীগঞ্জে সমাবেশ

রংপুরে সনাতনী সমাবেশে প্রশাসনের বাধা ও মাহীগঞ্জে সমাবেশ

রংপুরে সনাতনী সমাবেশে প্রশাসনের বাধা ও মাহীগঞ্জে সমাবেশ

আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২:৩০ টায় মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে শুরু হয়েছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের বিভাগীয় সমাবেশ। যদিও প্রথমে রংপুর নগরের কেন্দ্রস্থল জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরের এই মাঠে আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছে সংগঠনটি।

গত ৫ আগস্ট সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও মঠ-মন্দিরে হামলার বিচারের দাবিতে ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চ’ আন্দোলন শুরু করে। ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট একত্রিত হয়ে গঠন করে ‘সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। এই জোটের ব্যানারেই রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।

সমাবেশ আয়োজকরা জানান, তারা জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন যানজটের আশঙ্কায় সেখানে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজনের নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ১৫টি শর্ত দিয়ে কর্মসূচি শেষ করতে বলা হয়।

সনাতনী জাগরণ মঞ্চ রংপুরের সমন্বয়ক অভিযোগ করেন, প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের হয়রানি করছে। জিলা স্কুল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে মাহীগঞ্জের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় সমাবেশ করতে বলা হয়। সমন্বয়ক আরও অভিযোগ করেন, রংপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল থেকে সনাতনী সাধু ও সমর্থকদের বের করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের নির্দেশে।

ঠাকুরগাঁও থেকে আসা সনাতনীদের একটি দল জানান, দিনাজপুরের দশমাইল মোড়ে প্রশাসন তাদের গাড়ি আটকায় এবং সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেয়। প্রতিবাদের মুখে প্রশাসন গাড়ি ছেড়ে দিলেও পরে আবারও বাধা দেওয়া হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক বরণ কুশল চক্রবর্তী, গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, এবং অন্যান্য বিশিষ্ট সনাতনী নেতারা উপস্থিত আছেন।

সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, প্রশাসনের প্রথমে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও পরে অনুমতি বাতিল করে হয়রানি করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "আমাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা না করেই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এটি নিরাপদ মনে করছি না।"

এদিকে জেলা প্রশাসন জানায়, জিলা স্কুল মাঠে যানজট এড়ানোর জন্য মাহীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠ বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।

সমাবেশে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতনী নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। যদিও পথের বাধা ও প্রশাসনিক হয়রানির কারণে অনেক অংশগ্রহণকারী দেরিতে পৌঁছেছেন। এখন পর্যন্ত সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।