পোল্যান্ডের মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি নিয়ে রাশিয়ার হুমকি
- By Jamini Roy --
- 22 November, 2024
রাশিয়া পোল্যান্ডে স্থাপিত মার্কিন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঘাঁটিকে "পারমাণবিক ঝুঁকি বৃদ্ধি" করার অভিযোগ তুলে সরাসরি হুমকি দিয়েছে। মস্কোর দাবি, এই ঘাঁটি কৌশলগত স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক পদক্ষেপ। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই ঘাঁটি হামলার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
পোল্যান্ডের রেডজিকোও শহরে বাল্টিক সাগরের কাছে স্থাপিত এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঘাঁটি ন্যাটোর বৃহত্তর প্রতিরোধ কৌশলের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "এজিস অ্যাশোর মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম" (এএএমডিএস) পরিচালিত এই ঘাঁটিটি পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, "এই ঘাঁটি আমাদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি আমাদের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।"
রাশিয়া এই ঘাঁটিকে সরাসরি তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, এটি ধ্বংস করা হবে। রাশিয়ার অভিযোগ, ন্যাটোর এই পদক্ষেপ ১৯৮৯ সালের বার্লিন প্রাচীর পতনের পর দেওয়া প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন। মস্কো দাবি করে, ন্যাটো পূর্বদিকে আর অগ্রসর হবে না বলে ইউএসএসআর-কে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
মারিয়া জাখারোভা বলেন, "এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঘাঁটি কৌশলগত স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। এটি ধ্বংস করা রাশিয়ার অগ্রাধিকার।"
পোল্যান্ড ১৯৯৯ সালে ন্যাটোর সদস্যপদ লাভ করে এবং সুইডেন চলতি বছর জোটে যোগ দেয়। এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, এবং লিথুয়ানিয়া—তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য এবং রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সরাসরি স্থলসীমান্ত রয়েছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের মতে, এটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ন্যাটোর সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোকে "উস্কানিমূলক" এবং রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই এই নতুন মার্কিন ঘাঁটি ন্যাটো এবং রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘাঁটি রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া আরও আক্রমণাত্মক করতে পারে, যা আঞ্চলিক সংঘাতকে বৈশ্বিক সংঘাতে রূপান্তর করতে পারে।
বিশ্বশান্তি ও কূটনৈতিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা।