রাশিয়া নির্মাণ করছে পরমাণু বোমা আশ্রয়কেন্দ্র
- By Jamini Roy --
- 20 November, 2024
বিশ্বে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার মাঝে, রাশিয়া পরমাণু হামলার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এবং সেই প্রেক্ষিতে দেশটি পরমাণু বোমা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয় থেকে সুরক্ষা দিতে নতুন ভ্রাম্যমাণ আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করছে। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরমাণু বোমা হামলা থেকে সাময়িক সুরক্ষা প্রদান করবে, বিশেষ করে শকওয়েভ এবং তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে। রাশিয়ার ইমার্জেন্সি মিনিস্ট্রির গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
রাশিয়ার তৈরি এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো “কেইউবি-এম” নামে পরিচিত এবং এগুলো দেখতে জাহাজে ব্যবহৃত কনটেইনারের মতো। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রের দুটি মডিউল রয়েছে—একটি মডিউল ৫৪ জন মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার উপযোগী এবং অন্যটি কারিগরি ব্লক হিসেবে ব্যবহৃত হবে। প্রয়োজন হলে, আরও মডিউল যুক্ত করা সম্ভব। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো শুধু পরমাণু হামলা নয়, বরং বিস্ফোরণ, প্রচলিত অস্ত্রের আঘাত, রাসায়নিক দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ড থেকেও সুরক্ষা প্রদান করবে।
রাশিয়া এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করলেও দেশটির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে এটি বর্তমানে চলমান আন্তর্জাতিক সংকটের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তবে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে মার্কিন তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর অনুমতি দেওয়ার পর, রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রনীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া অনুমতির পর, ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূখণ্ডে মার্কিন সরবরাহকৃত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের হামলার সময় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস হয়ে যায়, তবে হামলার ধ্বংসাবশেষে একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন লেগে যায়।
ক্রেমলিন ইতিমধ্যে এই হামলাকে ‘বেপরোয়া’ অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে, রাশিয়া যদি তার ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সম্মুখীন হয়, তবে তা প্রতিশোধ নিতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে।
রাশিয়ার এই ভ্রাম্যমাণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হচ্ছে যে কোনো পরিস্থিতিতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। বিশেষ করে, রাশিয়ার বিস্তীর্ণ বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলে সহজেই এগুলো স্থাপন করা যাবে, এবং প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা যুক্ত করার সুযোগও রয়েছে। রাশিয়া আশা করছে, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সামরিক উত্তেজনা বা পরমাণু হামলার সময় জনগণের জীবন রক্ষা করবে।
এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নিয়ে আরও বিশদ তথ্য জানানো হয়েছে যে, এগুলো ট্রাকের মাধ্যমে সহজে স্থানান্তর করা যাবে, ফলে বিপদগ্রস্ত অঞ্চলে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হবে।