মার্কিন মিসাইল দিয়ে রাশিয়ায় হামলা
- By Jamini Roy --
- 20 November, 2024
ইউক্রেনের রাশিয়ার ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার মিসাইল ব্যবহারের ঘটনা বৈশ্বিক অঙ্গনে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করেছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) যুদ্ধের ১০০০তম দিনে এই হামলা চালানো হয়। রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন মার্কিন আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (ATACMS) ব্যবহার করে তাদের ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভোর ৩টা ২৫ মিনিটে ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে ছয়টি ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে পাঁচটি ভূপাতিত করা হলেও একটি ক্ষেপণাস্ত্র সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। এতে আগুন ধরে গেলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রাশিয়ার অভিযোগ অনুযায়ী, এই হামলায় সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইউক্রেনের এই কার্যক্রম পরিস্থিতিকে পারমাণবিক প্রত্যাঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক নীতিমালা নবায়ন করেছেন, যা এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
হামলার বিষয়ে ইউক্রেন সরকার সরাসরি কিছু না বললেও তাদের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে গোলাবারুদের গুদামে হামলা চালানো হয়েছে। তবে তারা ATACMS ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “রাশিয়ার আগ্রাসনের কাছে আমরা নতি স্বীকার করব না। আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের জন্য রাশিয়াকে এর খেসারত দিতে হবে।”
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়া তাদের সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা শান্তি আলোচনার প্রতি তাদের অনীহার প্রমাণ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ইউক্রেনের জনগণ স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই মিসাইল ব্যবহারের অনুমোদনে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা এই বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এক্সে লিখেছেন, “বাইডেন প্রশাসন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধাতে চাচ্ছে।” ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দার সাবেক পরিচালক রিচার্ড গ্রেনেল মন্তব্য করেন, “ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রাক্কালে বাইডেন নতুন যুদ্ধ শুরু করে সবকিছু অস্থিতিশীল করে তুলেছেন।”
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের এই হামলা এবং রাশিয়ার পাল্টা হুমকি পরিস্থিতিকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। রাশিয়ার আইনপ্রণেতা মারিয়া বুটিনা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে এই ধরনের অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখে, তাহলে বৈশ্বিক যুদ্ধের ঝুঁকি আরও বাড়বে।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমেই বৈশ্বিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। ইউক্রেনের মিসাইল হামলা, রাশিয়ার পাল্টা হুমকি, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছেছে। বিশ্ব এখন নতুন বিপর্যয়ের শঙ্কায় তাকিয়ে আছে।