একাত্তরের জন্য ক্ষমা চাইবে জামায়াত: শফিকুর
- By Jamini Roy --
- 20 November, 2024
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা অপরাধ হিসেবে প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে দলটি। তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায়।
একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াত ইসলামী পাকিস্তানের পক্ষে সাপোর্ট দিয়েছিল, কিন্তু এটি কোনো অপরাধ নয়। তখন পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানেরই অংশ ছিল। তবে যদি কোনো ব্যক্তি অপরাধ করেন, যেমন খুন, লুটপাট, বাড়িতে আগুন দেওয়া বা কারও ইজ্জতে আঘাত করা, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত। যদি আমাদের কোনো ভুল প্রমাণ হয়, আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইব।”
তিনি আরও দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্যান্য দলও পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, কিন্তু কেবল জামায়াতের নাম এসেছে।
অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান ১৯৭৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এ অভ্যুত্থানে দেশের সব শ্রেণির মানুষ অংশ নিয়েছিল। তাদের আত্মত্যাগের মর্যাদা দিতে হবে।” নিহতদের আত্মার মাগফেরাত এবং তাদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করেন তিনি।
প্রবাসীদের অবদানের কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “রেমিটেন্সের মাধ্যমে প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছে। তবে তাদের মনিটারী রেমিটেন্সের পাশাপাশি ইন্টেলিজেন্স রেমিটেন্সও প্রয়োজন। এটি দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে সহায়তা করবে।” তিনি প্রবাসীদের প্রতি স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে দুর্নীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “যে উন্নয়ন হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। অন্যান্য দেশে একই প্রকল্প অনেক কম ব্যয়ে সম্পন্ন হয়, যেখানে আমাদের দেশে সময় বাড়িয়ে খরচ বাড়ানো হয়েছে। এটি জাতির জন্য লজ্জার।”
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ব্রিটেনের কোর্ট চৌধুরী মাইনুদ্দিনের বিচারের রায়ে বাংলাদেশে ওয়ার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে ‘জেনোসাইড অব জাস্টিস’ হিসেবে অভিহিত করেছে। “১৫ বছর ধরে আমাদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি, র্যালি করতে দেওয়া হয়নি,” অভিযোগ করেন তিনি।
পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা। কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইমাম উদ্দিন এবং দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন কামাল হোসেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বাংলা মিডিয়ার ৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিক এতে অংশ নেন।