কুয়াকাটায় রাস উৎসব: পূণ্যার্থীদের লাখো ভিড়ে মুখর সমুদ্র সৈকত
- By Jamini Roy --
- 15 November, 2024
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে শুক্রবার হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব রাস মেলা উদযাপিত হয়েছে। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজারো ভক্ত সমবেত হয়ে সাগর স্নানে অংশ নেন।
পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী রাত ৩ টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত চলা পূর্ণিমার পর সাগর স্নান শুরু হয়। কুয়াকাটার শ্রীশ্রী রাঁধা কৃষ্ণ মন্দির এবং তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম মন্দির প্রাঙ্গণে ১৪ নভেম্বর রাত থেকে শুরু হয় এই উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পূণ্যার্থীরা ভোর রাত থেকে সাগর সৈকতে পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে স্নান করেন। এই সময়, বিভিন্ন মানত পূরণ করতে আসা ভক্তরা সৈকতে মন্দিরে পূজা দেন। রাস পূর্ণিমা পালনের মধ্যে দিয়ে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নয়, বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষও এই উৎসবে যোগ দেন।
রাস পূর্ণিমায় ভক্তরা ২০০ বছর ধরে এই প্রথার অনুসরণ করছেন। দ্বাপর যুগে বৃন্দাবনে যমুনার তীরে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার সঙ্গে লীলা করার সময় স্নান করার প্রথা সৃষ্ট হয়েছিল, যা কুয়াকাটায় রয়ে গেছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে সাগর সৈকত এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
১৪ নভেম্বর রাত থেকে মন্দির প্রাঙ্গণে অধিবাসের মধ্য দিয়ে রাস পূর্ণিমার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। রাতভর কীর্তন, ভাবগত পাঠ, মঙ্গল ঘট স্থাপন এবং প্রার্থনার অনুষ্ঠান চলতে থাকে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো পূণ্যার্থী এখানে সাগর স্নান করে পাপ মোচনের আশা নিয়ে।
পূর্ণিমা তিথিতে সাগর স্নানে অংশগ্রহণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রশাসনিক বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে। আশা করা হচ্ছে, শনিবার ভোররাতে কুয়াকাটা সৈকতে আরও হাজার হাজার পূণ্যার্থী স্নান করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে রাস পূর্ণিমা উৎসবে প্রায় তিন লাখ পূণ্যার্থী সমাগম ঘটবে। জেলা, উপজেলা এবং পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রস্তুত করা হয়েছে।
কুয়াকাটা রাস মেলা ও পূর্ণিমা স্নান অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনিক সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশ নিতে পারেন।