Logo

সাহিত্য সংস্কৃতি    >>   আজ উদযাপন হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের প্রিয় উৎসব ভাইফোঁটা

আজ উদযাপন হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের প্রিয় উৎসব ভাইফোঁটা

আজ উদযাপন হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের প্রিয় উৎসব ভাইফোঁটা

বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে  জনপ্রিয় উৎসব হল ভাইফোঁটা। ভাই এবং বোনের মধ্যে অপরিসীম ভালোবাসা ও সম্পর্ককে কেন্দ্র করে উদযাপিত হয় এই উৎসবটি। প্রতি বছর শুক্লা তিথির দ্বিতীয়াতে ভাইফোঁটা পালন করা হয়, যা কালীপূজার দুই দিন পর অনুষ্ঠিত হয়।

ভাইফোঁটার উৎসবের পেছনে পৌরাণিক ব্যাখ্যা রয়েছে। বলা হয় যে কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তার ভাই যমরাজের মঙ্গল কামনায় আরাধনা করেছিলেন। এই আরাধনার ফলস্বরূপ যমরাজ অমরত্ব লাভ করেন। এই ঐতিহ্যবাহী কাহিনীর প্রভাবে বর্তমানকালের বোনরাও তাদের ভাইয়ের জন্য এই ধর্মাচার পালন করে আসছেন।

ভাইফোঁটা উৎসব মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা পালিত হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামে পরিচিত, এবং এটি পাঁচ দিনের দীপাবলি উৎসবের শেষ দিন। মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে এই উৎসবকে ভাইবিজ বলা হয়, নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এটি ভাইটিকা এবং অনেক স্থানে যমদ্বিতীয়া নামেও পরিচিত।

উৎসবের দিনে, বোনেরা তাদের ভাইদের জন্য বিশেষ খাবার এবং মিষ্টির ব্যবস্থা করে। বোন প্রথমে চন্দন কাঠ জল দিয়ে ঘষে, কিছু সময় দইও মিশ্রিত করেন। এরপর তিনি নিজের অনামিকা আঙ্গুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে তিনবার ফোঁটা দিয়ে বলেন:

“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।”

এরপর বোন ভাইয়ের মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখেন। এই সময় শঙ্খ বাজানো হয় এবং হিন্দু নারীরা উলুধ্বনি করেন। এরপর বোন তার ভাইকে আশীর্বাদ করেন, যদি তিনি ভাইয়ের তুলনায় বড় হন, অন্যথায় ভাই বোনকে আশীর্বাদ করেন। বোন ভাইকে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি দ্বারা মিষ্টিমুখ করান এবং উপহার দেন। ভাইও তার সাধ্যমতো বোনকে উপহার দিয়ে থাকেন।

ভাইফোঁটা উৎসব শুধুমাত্র একটি সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসা, মঙ্গল ও একতার প্রতীক।