Logo

সাহিত্য সংস্কৃতি    >>   ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনা বাঙালির উন্নয়নের সারথি

ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনা বাঙালির উন্নয়নের সারথি

ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনা বাঙালির উন্নয়নের সারথি

Progga News Desk:

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা পিতার আদর্শের এক দৃঢ় ও প্রজ্ঞাবান উত্তরসূরি। বঙ্গবন্ধুর মতই তিনি গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের দীর্ঘ চার দশক সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।

১৯৮১ সালের ১৭ই মে প্রবাস জীবন শেষ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। সেই থেকে শুরু হয় তার নিরলস সংগ্রাম—স্বৈরতন্ত্রবিরোধী আন্দোলন, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। তিনি পিতার রেখে যাওয়া সংগঠন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে নেতৃত্ব দিয়েছেন সংকটের শতধারা পেরিয়ে। সেই পথচলায় তাকে বহুবার জেল-জুলুম, হত্যাচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবু তিনি অবিচল থেকেছেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংকল্পে।

আজ তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু উন্নয়নের পথে এগোয়নি, বরং বিশ্বের দরবারে এক নতুন পরিচিতি পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ উঠে এসেছে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে, বিশ্বশান্তি সূচক, মানব উন্নয়ন সূচকসহ অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনেই সেই অগ্রগতির ছাপ স্পষ্ট।

আমরা অতীতে দেখেছি সামরিক শাসন ও বিএনপি সরকারের শাসনামলে দেশের ভেতরে জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি। সেই তুলনায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে দেশ পেয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির প্রসার এবং সর্বোপরি একটি নতুন প্রজন্মের আত্মবিশ্বাস।

তবে introspection বা আত্মসমালোচনা জরুরি। আওয়ামী লীগের অনেক সময় দেখা গেছে—মন্ত্রিসভা ও সংসদ সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনকেই স্থানীয় সরকার, দলে ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদে বসানো হয়েছে। এতে দলের নিবেদিতপ্রাণ তৃণমূল কর্মীরা আস্থাহীনতায় ভুগেছেন। বংশগত, আদর্শিক ও চেতনাসম্পন্ন কর্মীদের অনেকেই উপেক্ষিত হয়েছেন—তাদের প্রাপ্য সম্মান ও মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

অন্যদিকে, সুবিধাভোগী চাটুকার, হাইব্রিডরা বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়ে সংগঠনের ভেতরেও অস্থিরতা তৈরি করেছেন। এটি দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই প্রয়োজন দলীয় গঠন ও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় প্রকৃত ত্যাগী, আদর্শিক ও জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি আবেগ, একটি বিশ্বাসের নাম। এই দল জাতির প্রতীক, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের গৌরবময় ধারক। হাজারো ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও আওয়ামী লীগকে কখনো দমিয়ে রাখা যায়নি। যেমনটি বলা হয়ে থাকে—স্বর্ণ যত পোড়ানো হোক, তার ঔজ্জ্বল্য ততই বাড়ে।

আজকের সময়ে, যখন মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার সংকুচিত হওয়ার অভিযোগ উঠছে, তখন আওয়ামী লীগের উচিত হবে গণমানুষের পাশে আরও দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো। ভুল-ত্রুটি স্বীকার করে, দলের অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে স্বচ্ছ, কর্মীবান্ধব, আদর্শিক নেতৃত্বে ফিরে আসা সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হেরে গেলে কেবল একটি রাজনৈতিক দল হারে না—হারে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, গণতন্ত্র ও প্রগতির ধারা। তাই এখনই সময়—নতুন করে জেগে ওঠার, রাজপথে জনগণের সাথে একত্র হয়ে গৌরবের ধারাবাহিকতা রক্ষার।

নয়ন বিশ্বাস রকি
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট
প্রজ্ঞা নিউজ, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র