Logo

আন্তর্জাতিক    >>   অভ্যুত্থানের গুঞ্জন মিথ্যা, স্থিতিশীলতা ও দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে সেনাপ্রধান

অভ্যুত্থানের গুঞ্জন মিথ্যা, স্থিতিশীলতা ও দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে সেনাপ্রধান

অভ্যুত্থানের গুঞ্জন মিথ্যা, স্থিতিশীলতা ও দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে সেনাপ্রধান

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক : 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার পেশাদারিত্ব ও কৌশলী নেতৃত্বের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ভেতরে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও তিনি সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষ ও পেশাদার রাখার বিষয়ে অনড় রয়েছেন।

বিভিন্ন মহল থেকে তাকে নিয়ে গুঞ্জন ছড়ানো হলেও, সেনাপ্রধানের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে—তিনি কোনো ধরনের অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করছেন না। বরং, তিনি চান দ্রুত একটি অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যাক।

এছাড়া জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, তার নেতৃত্বের দুটি মূল দিক হলো—

  1. সামরিক শাসনের বিরোধিতা: তিনি বিশ্বাস করেন, ইতিহাসের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বাংলাদেশে সামরিক শাসন কখনো কার্যকর হয়নি।
  2. সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ধরে রাখা: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পেশাদার সেনাবাহিনী অপরিহার্য।

বিশ্বসংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও স্বীকৃতি মিলছে যে, জেনারেল ওয়াকার সামরিক বাহিনীকে নিরপেক্ষ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে “অনুপাতহীন শক্তি প্রয়োগ” থেকে বিরত ছিল।

 

গুজবের জবাব: সেনাবাহিনী রাজনীতি নয়, স্থিতিশীলতা চায়

 

বিভিন্ন মহল থেকে সেনাপ্রধানকে নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে, বিশেষ করে ছাত্র আন্দোলনপন্থী কিছু নেতা ও ব্লগাররা তাকে ভারতীয় স্বার্থে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—

  • জেনারেল ওয়াকার কোনো বিদেশি শক্তির “পুতুল” নন।
  • তার আদর্শ হলো পেশাদার সেনাবাহিনী, যা রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রতি আগ্রহী নয়।
  • তিনি সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ চান এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অবাধ নির্বাচনের পক্ষে।

কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি চাইলে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে পারেন।

তবে সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, জেনারেল ওয়াকার আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানে আগ্রহী। তিনি বলেছেন, “দয়া করে আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না যা আমি করতে চাই না।” বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত ছাত্র আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে একটি পরোক্ষ সতর্কবার্তা।

সেনাপ্রধানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য নতুন কোনো আন্দোলন।

একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেন, “যতদিন বর্তমান রাষ্ট্রপতি আছেন, ততদিন সেনাপ্রধানকে অপসারণের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।” স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর দেয়া বক্তব্যও সেনাবাহিনীর সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে তিনি বলেন—“বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য।”

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান যদি সফল হন, তাহলে দেশ একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগোবে। কিন্তু যদি ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়, তাহলে দেশ নতুন রাজনৈতিক সংকটে পড়তে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের কৌশলী নেতৃত্ব এবং দ্রুত নির্বাচনের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, রাজনৈতিক দলগুলো ও অন্যান্য শক্তিগুলো এই প্রক্রিয়ায় কতটা সহযোগিতা করবে?