Logo

রাজনীতি    >>   শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা ধামাচাপা দিতে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, পলকের স্বীকারোক্তি

শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা ধামাচাপা দিতে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, পলকের স্বীকারোক্তি

শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা ধামাচাপা দিতে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, পলকের স্বীকারোক্তি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যা ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, এ নির্দেশ সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন। বিষয়টি বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তদন্ত সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

২০২৩ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররাও আন্দোলন দমনে সক্রিয় ছিল। আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী পলক তখন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কখনো বলা হয়, "সুইচে চাপ লেগে বন্ধ হয়ে গেছে," আবার কখনো দাবি করা হয়, "খাজা টাওয়ারে আগুনের কারণে সেবা বিঘ্নিত হয়েছে।" তবে তদন্ত সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে পলক স্বীকার করেন, ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন।

ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ আরও শক্তিশালী হয়েছে। তদন্ত সংস্থা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথন উদ্ধার করেছে, যেখানে ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে নির্দেশনার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, "এই নির্দেশনায় গণহত্যার তথ্য চেপে যাওয়ার কৌশল বাস্তবায়ন করা হয়।"

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনাকর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আটজনকে। এদের মধ্যে মামুনসহ তিনজনকে একদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান বিচারপ্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর।

ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার যে কোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন চিফ প্রসিকিউটর। এ ছাড়া গণহত্যা-সংক্রান্ত সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

২০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।