সিরিয়া ছাড়ার কথা ভাবিনি: আসাদের মন্তব্য
- By Jamini Roy --
- 17 December, 2024
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের রাশিয়ায় চলে যাওয়ার ঘটনাটি ছিল একেবারেই পরিকল্পনাহীন, এমন দাবি করেছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট। গতকাল সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রকাশিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আসাদ কখনোই সিরিয়া ত্যাগ করতে চাননি। এটি তার পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রথম মন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে আসাদ এখনও টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি নিয়ন্ত্রণ করেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়। যদি বিবৃতিটি সত্যি হয়, তবে এটি ক্ষমতা হারানোর পর আসাদের প্রথম জনসমক্ষে বক্তব্য। খবর সিএনএনের।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, "সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থানের কোনো পরিকল্পনা ছিল না, এমনকি যুদ্ধের শেষ মুহূর্তেও নয়।" এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ রোববার ভোর পর্যন্ত আসাদ দামেস্কে অবস্থান করছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে ওই দিন সকালে তিনি সিরিয়ার হামিমিমে রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে যান।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, "ঘাঁটি আক্রমণের শিকার হলে রাশিয়া আমাকে স্থানান্তর করার অনুরোধ জানায়। সেখান থেকে আমাকে মস্কোতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনাটি ঘটেছিল দামেস্কের পতনের একদিন পর।"
বিবৃতিতে আসাদ দাবি করেন, দামেস্ক বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পরও তিনি কখনো পদত্যাগ বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের কথা বিবেচনা করেননি। বরং তার মনে হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
তিনি আরও বলেন, "যখন একটি রাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়ে এবং নেতৃত্ব অর্থবহ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন সেই অবস্থান উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে। এটি শুধু আমার নয়, যেকোনো নেতার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।"
আসাদ এবং তার পরিবারকে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পর মস্কো বিষয়টি ‘মানবিক কারণ’ হিসেবে উল্লেখ করে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার তথ্যমতে, সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ থেকে আসাদ এবং তার পরিবারকে রক্ষার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
বিবৃতির শেষাংশে আসাদ তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, "আমি আমার দেশ ছেড়ে যেতে চাইনি। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে এবং রাশিয়ার পরামর্শে আমাকে স্থানান্তর করা হয়।"
এই বিবৃতি যদি সত্যি হয়, তবে এটি সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসাদের অবস্থান নিয়ে আরও আলোচনার জন্ম দেবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে আসাদ তার সমর্থকদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন। যদিও টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি আসলেই আসাদের নিয়ন্ত্রণে কিনা, তা যাচাইয়ের বিষয় রয়ে গেছে।
সিরিয়ার রাজনীতিতে আসাদ প্রশাসনের ভূমিকা প্রায় শেষ বলে ধারণা করা হলেও তার রাশিয়ায় অবস্থানকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন মতামত দেখা যাচ্ছে। এই ঘটনা শুধু সিরিয়ার নয়, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে থাকবে।