মার্কিন প্রেস ব্রিফিংয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ইস্যু
- By Jamini Roy --
- 04 December, 2024
বাংলাদেশে ইসকনের সাবেক সংগঠক এবং সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার ও জামিন প্রক্রিয়ায় বাঁধা সৃষ্টি নিয়ে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়েও উঠে আসে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, "যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকুক না কেন, তাদের উপযুক্ত আইনি প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার অধিকার রয়েছে। মৌলিক মানবাধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব।"
একজন সাংবাদিক মার্কিন প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেন, চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশে ইসকনের নেতা। এছাড়াও, ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রস্তাবিত পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডও ইসকনের সদস্য। চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী বেআইনিভাবে গ্রেফতার হয়েছেন এবং তার পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে পারছেন না। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো পদক্ষেপ নেবে?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, "এই মামলার বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে নেই। তবে আমরা সবসময় মানবাধিকার রক্ষার ওপর জোর দিয়ে থাকি এবং এই নীতি অব্যাহত রাখব।"
এরই মধ্যে সম্মিলিত সনাতনী জোট একটি গতকাল ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট অভিযোগ করেছে, ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি নির্ধারিত থাকলেও কোনো আইনজীবী তার পক্ষে কেনো অংশ নিতে পারেননি।
জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে যারা আগে মামলা লড়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৭০ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। বাকিদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমনকি আদালত চত্বরে মিছিল করে তাদের সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আদালতের এই আচরণ দেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একজন নাগরিক হিসেবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনগত সহায়তা পাওয়ার অধিকার ছিল, যা ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবি করেছে। তারা বলেছে, "সরকার দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না করলে সনাতনী সম্প্রদায় রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।"
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, "চিন্ময় প্রভুর মুক্তি এবং পূর্ব ঘোষিত ৮ দফা দাবির বাস্তবায়নে সনাতনীরা মাঠে থাকবে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত।"
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির পরবর্তী তারিখ আগামী ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই দীর্ঘসূত্রিতা বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে।