সামরিক আইন প্রত্যাহারে সিদ্ধান্ত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের
- By Jamini Roy --
- 04 December, 2024
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সামরিক আইন জারি ও তা প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটল। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল আকস্মিকভাবে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সামরিক আইন জারি করেন। তবে পার্লামেন্টের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য এবং সাধারণ মানুষের তীব্র প্রতিবাদের মুখে তিনি সেই আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট ইউন জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “পার্লামেন্টের মতামতকে সম্মান জানিয়ে আমি সামরিক আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সামরিক বাহিনীকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
প্রেসিডেন্ট ইউন সামরিক আইন জারি করার সময় বলেছিলেন, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি মোকাবিলাই এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ। আইন জারির পর সেনাবাহিনীকে পার্লামেন্ট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে মোতায়েন করা হয়।
এ সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয় এবং সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সুককে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত পার্লামেন্ট সদস্য এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার পার্লামেন্টে সামরিক আইন বাতিলের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন। পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে অগণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেন। এ নিয়ে এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বলেন, “পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে আমি সম্মত হয়েছি।”
সামরিক আইন জারির পর সিউলসহ বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে জড়ো হয়ে হাজারো মানুষ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানায়।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের একটি ভয়াবহ উদাহরণ। মনে হচ্ছে আমরা একনায়কতন্ত্রে ফিরে গেছি।”
অপর এক বাসিন্দা বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আমাদের দেশের জন্য লজ্জাজনক।”
বুধবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাবে সায় দেন ইউন। তিনি জানান, দ্রুতই এই আদেশ কার্যকর হবে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক আইন জারি ও তা প্রত্যাহারের এই ঘটনার ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ইউনের আকস্মিক সিদ্ধান্ত দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। সামরিক আইন নিয়ে বিতর্কের ফলে প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তায় বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে মনে করছেন তারা।