অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের পদত্যাগ
- By Jamini Roy --
- 05 January, 2025
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার মুখে তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি সরকার প্রধান ও দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জোট সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেন নেহামার।
গত সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর অস্ট্রিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে জোট সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হয়। তবে, চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পিপলস পার্টি (ওভিপি) ও প্রধান বিরোধী দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি (এসপিও) একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
উদারপন্থি রাজনৈতিক দল নিওস জোট গঠনের আলোচনায় অংশ নিলেও শুক্রবার আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ায়। নিওসের এই সিদ্ধান্তের পরই মূলত জোট সরকার গঠনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে।
সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে নজিরবিহীন সাফল্য পায় অতি ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ফ্রিডম পার্টি। তারা প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম স্থান দখল করে। তবে ফ্রিডম পার্টির অতীত বিতর্কিত কার্যক্রম এবং অতি ডানপন্থি আদর্শের কারণে অন্যান্য রাজনৈতিক দল তাদের সঙ্গে জোট গড়তে অনীহা প্রকাশ করে।
নেহামারের কনজারভেটিভ পিপলস পার্টি ২৬.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করে এবং সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি ২১ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকে।
নির্বাচনের পর প্রায় তিন মাস ধরে চলা জোট গঠনের আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি বিবৃতিতে ফ্রিডম পার্টি জানায়, আলোচনার এই দীর্ঘ সময়ে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। তাদের মতে, সময়ক্ষেপণের এই প্রক্রিয়া দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে।
পদত্যাগের ঘোষণায় কার্ল নেহামার বলেন, "জোট সরকার গঠনে আমার দল ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এই অবস্থায় দেশকে স্থিতিশীলতা দিতে আমার পক্ষে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।"
অস্ট্রিয়ার রাজনীতিতে এই পদত্যাগ বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। নতুন চ্যান্সেলর হিসেবে কে দায়িত্ব নেবেন এবং কীভাবে রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় পৌঁছাবে, তা এখন দেখার বিষয়।
কার্ল নেহামারের পদত্যাগ অস্ট্রিয়ার রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর করেছে। জোট সরকার গঠনে ব্যর্থতার ফলে দেশটির রাজনীতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। নির্বাচনে জয়ী দলগুলোর আদর্শিক বিভাজন ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সংকট সমাধানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, অস্ট্রিয়া কি নতুন নির্বাচনের পথে যাবে, নাকি কোনও রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাবে?