তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- By Jamini Roy --
- 26 December, 2024
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুনের সূত্রপাত হলেও তা দ্রুত ওপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলা পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর সচিবালয়ে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, আগুনের ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, "আগুনের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।" তদন্ত কমিটিতে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে ১১ জনের মধ্যে হতে পারে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রাত ১টা ৫২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে খবর পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের দল ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করে। তবে আগুনের তীব্রতার কারণে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ সময় লেগে যায়। এ ঘটনায় একজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী, মো. সোহানুর জামান নয়ন, ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এবং পরে মারা যান।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অফিস রয়েছে, যা এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হলো:
- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়
- অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কমিটি পুরো ঘটনাটি বিশ্লেষণ করবে এবং প্রমাণ সংগ্রহ করে কারণ উদঘাটন করবে।"
তিনি আরও বলেন, "আগুনের ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে এবং এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।"
অগ্নিকাণ্ডের পর সচিবালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য। সাধারণ মানুষের সচিবালয়ে প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। স্থানীয় বাসিন্দা এবং শিক্ষার্থীরাও ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেন।
সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবনে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বড় ধরনের নিরাপত্তা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হলে ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।