ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি নিয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
- By Jamini Roy --
- 27 November, 2024
ইসরাইল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে। এই চুক্তির ফলে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলসহ পুরো অঞ্চলে শত্রুতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার আশা প্রকাশ করা হয়েছে। ২৮ নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, এবং ইসরাইলের মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একে একটি ‘সুসংবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার ভোর ৪টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং চুক্তির মাধ্যমে শত্রুতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার লক্ষ্য অর্জিত হবে। বাইডেন আরও বলেন, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানিজ সেনাবাহিনী তাদের নিজস্ব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেবে, তবে চুক্তি ভঙ্গ হলে ইসরাইল তার আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন, এবং তিনি দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রতি জোর দিয়েছেন। স্টারমার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করারও আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে মানবিক সহায়তার ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এই চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের এক বছর দীর্ঘ সংঘাতের সমাপ্তি ঘটানোর লক্ষ্যে চেষ্টা চলছে। শুরু থেকেই ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত তীব্রতর হয়ে ওঠে, বিশেষ করে গত বছরের অক্টোবর থেকে। ইসরাইল ২০২৩ সালের অক্টোবরে লেবাননে বিমান হামলা শুরু করে, এবং তারপর স্থল অভিযান চালিয়ে হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা হত্যার পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে হিজবুল্লাহ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর উদ্যোগে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হয়। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করে হিজবুল্লাহ এবং লেবানন সরকার, এবং এর পরে ইসরাইলও নীতিগতভাবে সম্মতি জানায়।
চুক্তি বাস্তবায়নের পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরাইল এই চুক্তি কার্যকর করবে, তবে যেকোনো চুক্তি লঙ্ঘন হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নেতানিয়াহু আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে, তবে যদি হিজবুল্লাহ আবারও সশস্ত্র হওয়ার চেষ্টা করে, ইসরাইল তার প্রতিক্রিয়া জানাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি দুই পক্ষের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছে, কিন্তু এর কার্যকারিতা এবং দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং পক্ষগুলোর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে।