Logo

অর্থনীতি    >>   এডিপি বাস্তবায়নে ধীর গতি, বেসরকারি বিনিয়োগে সংকট

এডিপি বাস্তবায়নে ধীর গতি, বেসরকারি বিনিয়োগে সংকট

এডিপি বাস্তবায়নে ধীর গতি, বেসরকারি বিনিয়োগে সংকট

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার অনেক কমে গেছে, এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে ব্যাপক পতন ঘটেছে। এর ফলে, অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ড. মাহমুদ জানান, এডিপি বাস্তবায়নের হার অত্যন্ত কম, যদিও আগে দুর্নীতি রোধের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, এখন থেকে এডিপি বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে সংশোধিত বাজেটে এডিপির আকার ছোট করা হবে, কারণ অনেক প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে, বিশেষত যেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।

তিনি আরও জানান, অপচয় রোধ করতে গিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন ধীর গতিতে হচ্ছে। তবে, যেসব প্রকল্পকে ভালো মনে হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন দ্রুত করা হবে। তিনি বলেন, "যেগুলো ভালো প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে নীতি সমন্বয়ের সময় এসেছে।" এর ফলে, পিছিয়ে পড়া এডিপি অনেকটা শুধরে নেয়া যাবে।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "এ খাতে মানুষের বিনিয়োগের আগ্রহ নেই, বিশেষ করে সুদের হার বাড়ানোর কারণে অর্থ লগ্নিতে আগ্রহ কমে গেছে।" তিনি জানান, কিছু প্রকল্প পরিচালক পদত্যাগ করেছেন বা পালিয়ে গেছেন, এর ফলে নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দিতে হয়েছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে মাতারবাড়ি প্রকল্পের পরিচালককে উল্লেখ করেন, যিনি সরকারি সম্পদ বিক্রি করে পালিয়ে গেছেন এবং তাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, মন্ত্রণালয়গুলো এখনো পূর্বের মতো সচল হয়নি জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, "আমরা নতুন প্রকল্প কমাচ্ছি, কারণ প্রকল্প ব্যয়ের সুফল যাচাই করা হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, উদ্ভাবনী প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে এবং রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বিষয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

একনেক সভায় ৫টি নতুন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার ব্যয় প্রায় ৫ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন ও ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘যুব উদ্যোক্তাদের উন্নীতকরণ’ প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরের বর্জ্য ও তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্প’।

এছাড়া, ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে দুটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে।