গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠজনরা ১০০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে এবং উন্নয়নের নামে তারা আমাদের অর্থনীতি ফোকলা করে দিয়েছে।” এই মন্তব্য তিনি রাজশাহীতে আয়োজিত গণসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে করেন। ২৩ নভেম্বর শনিবার দুপুরে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই গণসংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “এই সরকারের দুর্নীতি আর অর্থ পাচারের ফলে দেশের অর্থনীতি গভীর সংকটে পড়েছে, এবং দেশের সাধারণ মানুষ তার খেসারত দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের উত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমাগত অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে, এবং এর ফলস্বরূপ জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি জুলাই বিপ্লবের প্রসঙ্গে বলেন, "শিক্ষার্থীরা যখন রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তুলেছে, তখন তা একেবারেই সময়োপযোগী। অতীতে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার মতো যে বন্দোবস্ত ছিল, তা আর হতে পারে না। বিশেষত, ৭২ সালের সংবিধান ও বাকশাল কায়েমের পর, শেখ হাসিনাও সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল তৈরি করেছেন।" জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, “আমরা চাই ৭২ সালের মতো ফ্যাসিস্ট সংবিধান নয়, একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান।” তিনি মনে করেন, “এটা কোনো ভাবেই একক রাজনৈতিক দলের অধীনে পরিচালিত হতে পারে না। নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক শক্তির আবির্ভাব দরকার, যা দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে।”
এছাড়া, তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ব্যাপারে বলেন, "বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের ভেতরে এক ধরনের অস্থিরতা এবং দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র ও নীলনকশা তৈরির চেষ্টা চলছে, যা দেশ ও জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে।" সাকি দৃঢ়ভাবে দাবি করেন, “এখন সময় এসেছে জনগণকে একত্রিত করে এক নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সকলকে একসাথে হতে হবে।”
তিনি সমাবেশে উপস্থিত জনতাকে সতর্ক করে বলেন, "এই সংকটকালে আমাদের সকলের উচিত একত্রিত হওয়া এবং দেশের উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। জনগণের পক্ষে কথা বলা এবং তাদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।"
জোনায়েদ সাকির এই বক্তব্য দেশব্যাপী রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে, এবং তিনি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।