Logo

আন্তর্জাতিক    >>   রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত: নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা চরমে

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত: নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা চরমে

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত: নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা চরমে

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘাত নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে, যেখানে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র এবং পশ্চিমা অস্ত্রের ব্যবহার পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। ইউক্রেনের দিনিপ্রো শহরে রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলায় নতুন ধরনের হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুমোদনে ইউক্রেন ১৯ নভেম্বর ছয়টি মার্কিন-নির্মিত এটিএসিএমএস এবং ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালায়। এরই জবাবে রাশিয়া ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনায় মাঝারি-পাল্লার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, "যুদ্ধ এখন একটি আঞ্চলিক সংঘাত থেকে বৈশ্বিক যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।"

ক্রেমলিন দাবি করেছে, রাশিয়ার সামরিক স্থাপনায় হামলার জবাবেই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। পুতিন আরও জানান, তারা পশ্চিমা বিশ্বকে এই হামলার ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিল।

ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়া দিনিপ্রো শহরে আন্তঃমহাদেশীয় নতুন ধরনের পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। যদিও রাশিয়া দাবি করেছে, এই হামলায় তাদের নন-পারমাণবিক হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র "ওরেশনিক" ব্যবহার করা হয়েছে। হামলায় দিনিপ্রো শহরের সামরিক স্থাপনা ও প্রতিরক্ষা প্রকল্প লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, "মস্কো পশ্চিমা অস্ত্রের প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত এবং এমন পাল্টা জবাব আরও আসবে।" তিনি বলেন, "আমরা বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করে তারপরই হামলা চালাব।"

পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে দোষারোপ করে বলেন, "এই সংঘাত পশ্চিমা বিশ্ব উস্কে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের অস্ত্র সহায়তা ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হামলা চালাতে উৎসাহিত করেছে।"

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "যুদ্ধটি আন্তর্জাতিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে।"

পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বেশ শক্তিশালী এবং একাধিক পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম। তবে এটি দূরপাল্লায় আঘাত হানতে সক্ষম নয় বলে দাবি করেন তারা।

২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তবে সংঘাত ক্রমশ আঞ্চলিক সীমা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। পশ্চিমা অস্ত্রের ব্যবহার এবং রাশিয়ার পাল্টা জবাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই সংঘাত অব্যাহত থাকে, তবে তা বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা এবং কূটনৈতিক সমাধান ছাড়া এই যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়।