টিআইবি’র পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ গ্রহণের আহ্বান
- By Jamini Roy --
- 18 November, 2024
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বলছে, কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও, রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের অভাবে সরকার কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। তাদের মতে, রাষ্ট্র সংস্কার না করলে এবং নির্দিষ্ট কৌশল গ্রহণ না করলে, চলমান ৭ জুলাই আন্দোলনের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) একটি সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে এবং সরকার থেকে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানায়। সংস্থার প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে ১০টি কমিশন গঠন করা হলেও সেগুলো কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং ব্যক্তি মালিকানা খাত এখনও সংস্কার হয়নি।"
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি টিআইবি’র আক্ষেপ, বিশেষত সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অ্যাডহক প্রবণতা, সরকার পরিচালনায় স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সংস্থাটি আরও জানায়, সরকারের নেতৃত্বে সমন্বয়ের অভাব এবং দায়িত্ববণ্টনে অস্পষ্টতা রয়েছে।
টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে যুক্ত করে যে, বর্তমান সরকারের আর্থিক খাতের উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পাশাপাশি, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছু ইতিবাচক প্রভাব থাকলেও দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় জনগণের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে।
পর্যালোচনায় আরও উল্লেখ করা হয়, সরকার পতনের পর বিএনপি দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবর্তে দখলবাজি ও চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পেয়েছে। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলগুলোর প্রভাব বেড়েছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন স্বীকারোক্তি বা দুঃখ প্রকাশ দেখানো হয়নি।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, ভারত সরকারের পতন ও তার পরবর্তী কূটনৈতিক পরাজয়ে সরকার পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, জেন্ডার, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর সহিংসতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায়, টিআইবি দাবি করেছে যে সরকারের উচিত দ্রুত রোডম্যাপ প্রণয়ন করে, অন্তর্বর্তীকালীন কার্যক্রমে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা, যাতে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর সঠিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের আস্থার পুনর্স্থাপন করা যায়।