ইরাকে ৪০ বছর পর জাতীয় আদমশুমারি শুরু
- By Jamini Roy --
- 21 November, 2024
ইরাকে প্রায় চার দশক পর প্রথমবারের মতো জাতীয় আদমশুমারি শুরু হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে এই গণনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে বুধবার (২০ নভেম্বর) থেকে শুরু হলো নতুন আদমশুমারি কার্যক্রম। আদমশুমারি উপলক্ষে দেশজুড়ে দুই দিনের কারফিউ ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধ ও বৃহস্পতিবার ইরাকের ১৮টি প্রদেশের ১ লাখ ২০ হাজার গবেষক দেশব্যাপী নাগরিকদের পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এই উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহায়তায়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল-জাহরা আল-হিন্দাউই জানান, এই আদমশুমারি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেবে। এসব তথ্য থেকে ইরাক সরকার তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি এবং অর্থনৈতিক নীতিমালা ঠিক করতে পারবে।
ইরাকের ইতিহাস বিগত কয়েক দশক ধরে সংঘাত এবং নিষেধাজ্ঞায় পরিপূর্ণ। ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর সাম্প্রদায়িক সংঘাত, আইএসআইএল (আইএসআইএস)-এর উত্থান এবং দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে এই আদমশুমারি ইরাকের সম্পদ বন্টন এবং বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই আদমশুমারির বিশেষ দিক হলো, পরিবার থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হলেও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য করা হবে না। মুসলমানদের সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায় নিয়ে কোনো আলাদা তথ্য নেওয়া হবে না। এমনকি জাতিগত পরিচয় নিয়েও তথ্য সংগ্রহ থেকে বিরত থাকবে সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আদমশুমারি ইরাকের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাজেট বরাদ্দে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাতিসংঘের সহায়তায় পরিচালিত এই কার্যক্রম দেশের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সাহায্য করবে।
চার দশক পর শুরু হওয়া এই জাতীয় আদমশুমারি ইরাকের উন্নয়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ। এটি দেশের জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে আরও কার্যকর সংযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।