দেশে গত ১৫ বছরে গুমের শিকার হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের নাম আলোচনায় এসেছে। জানা গেছে, গুমের এসব ঘটনা সংগঠিত করার জন্য সাবেক র্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছিল। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যেমন ডিবি, র্যাব-১ ও ২ এবং ডিজিএফআইয়ের সদস্যরা এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
গুমের ঘটনা নিয়ে গঠিত 'কমিশন অব ইনকোয়ারি' বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে এবং এর মধ্যে অনেকের নাম উঠে এসেছে। একটি সূত্র জানায়, গুমের সাথে জড়িতরা বর্তমানে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাদের চক্রান্তের সত্যতা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
বেনজীর আহমেদ, যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের মধ্যে ডিএমপির কমিশনার, র্যাবের মহাপরিচালক এবং আইজিপি ছিলেন, সবসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে যে গুমের লক্ষ্যে নামগুলো তার কাছে পৌঁছাত এবং পরে তিনি অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে টার্গেট ব্যক্তিকে অপহরণ করতেন।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান জানান, তারা গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে কাজ করেছেন, তবে অপরাধীদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অভিযানে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা সাদা পোশাকে ছিল এবং এক সংস্থা অপরটির পরিচয় ধারণ করায় ভুক্তভোগীরা প্রকৃত অপরাধীদের নাম জানাতে পারেননি।
এছাড়া, বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত টিমের সদস্যদের দক্ষতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি টিমের নেতৃত্বে একজন অফিসার এবং সাত থেকে আটজন সদস্য দায়িত্ব পালন করতেন। দেশব্যাপী মোট দুইশ’র মতো কর্মকর্তার এই গুম সংক্রান্ত ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, হারুন অর রশীদ লালবাগ জোনের ডিসি থাকাকালীন গুমের ঘটনা ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন। অফিসিয়াল নির্দেশনা প্রাপ্তির পর বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে এসব গুমের ঘটনা বাস্তবায়িত হত। তদন্তের ফলে প্রকৃত সত্য সামনে আসবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট মহল।