গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়। তবে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথি রাষ্ট্রপতির কাছে নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, "শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র শুনেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।" সাক্ষাৎকারটি গত ১৯ অক্টোবর ‘জনতার চোখ’ পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণে প্রকাশিত হয়।
মতিউর রহমান চৌধুরী উল্লেখ করেন, যদি প্রধানমন্ত্রী সত্যিই পদত্যাগ করে থাকেন, তাহলে তার পদত্যাগপত্রের কোনো না কোনো অনুলিপি পাওয়া যেত। তিন সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালালেও পদত্যাগপত্রের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে, যেখানে সাধারণত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু সেখানেও কিছু মেলেনি।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, "আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। হয়তো শেখ হাসিনা সময় পাননি। ৫ আগস্ট সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে ফোন এসেছিল, যাতে বলা হয় তিনি বঙ্গভবনে এসে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তবে কিছুক্ষণ পরই আরেকটি ফোন আসে যে তিনি আসছেন না। পরে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।"
এ পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, "সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারও বললেন যে তিনি পদত্যাগের ব্যাপারে শুনেছেন, কিন্তু নিশ্চিত তথ্য নেই। আমি গুজবের ভিত্তিতে চলতে পারি না, তাই সত্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাই।"
পদত্যাগপত্রের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও শেখ হাসিনার দেশত্যাগ নিয়ে আর কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি সুপ্রিম কোর্টের মতামতও চেয়েছেন। আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আদালত ৮ আগস্ট মতামত দেন, যাতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি সেই সরকারকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন।