Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পরও কেন পিছু হটছে না বেইজিং

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পরও কেন পিছু হটছে না বেইজিং

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পরও কেন পিছু হটছে না বেইজিং

Progga News Desk:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর ঘোষিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও চীনের জন্য তা করেননি। বরং দেশটির পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করেছেন, যা কার্যকর করারও ঘোষণা দিয়েছেন। জবাবে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে বেইজিং। এই শুল্ক যুদ্ধে বেইজিং কেন ট্রাম্পের কাছে হার শিকার করছে না, এমন একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে। এর সহজ উত্তর হলো, বেইজিংয়ের এটি করার দরকার নেই।

চীনের নেতারা বলবেন, তাঁরা কোনো ধমকের কাছে নতিস্বীকার করতে রাজি নন। এই কথা তাঁদের সরকার এরই মধ্যে বারবার ট্রাম্প প্রশাসনকে জানিয়েছে। তাঁরা এটাও বলেছে, ওয়াশিংটনের শুল্কের মুখে পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় তাঁদের অনেক বেশি কিছু করার ক্ষমতা রয়েছে।

শুল্ক যুদ্ধ শুরুর আগে চীনের বিপুল পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হতো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে চীনের আয় দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২ শতাংশ।

 

এর অর্থ হলো, এ মুহূর্তে চীনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানো স্পষ্টত পছন্দ করছে না। কারণ, বর্তমানে দেশটি নিজেদের অর্থনীতির বড় কিছু সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। এসব সমস্যার মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলে আসা আবাসন খাতের সংকট, অতিরিক্ত আঞ্চলিক ঋণ ও তরুণদের বেকারত্ব অন্যতম।তবে এসব সমস্যা সত্ত্বেও চীন সরকার নিজেদের জনগণকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হামলা মোকাবিলায় তাঁরা শক্ত অবস্থানে রয়েছে। দেশটির নেতারা এটাও জানিয়েছেন, তাঁদের আরোপিত শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ট্রাম্প দম্ভ করে নিজ সমর্থকদের বলেছিলেন, শুধু শুল্ক আরোপ করেই চীনকে সহজে হার মানতে বাধ্য করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা চরম বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিং সফররত স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে শুক্রবারবলেছেন, তাঁর দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্মিলিতভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘একতরফা বুলিংয়ের চর্চাকে প্রতিহত করা’ উচিত।

 

জবাবে পেদ্রো সানচেজ বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের বাণিজ্য উত্তেজনা চীন ও ইউরোপের মধ্যকার সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করা উচিত হবে না।

গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির পণ্যে চীনের নতুন শুল্ক ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে রাজধানী বেইজিংয়ে সি-সানচেজের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে দেশটি এটাও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করলেও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে না বেইজিং।আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফরে যাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি। ট্রাম্পের শুল্কে যেসব দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এসব দেশ সেগুলোর অন্যতম।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মন্ত্রীরা এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব এবং ভারতের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেছেন।আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফরে যাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি। ট্রাম্পের শুল্কে যেসব দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এসব দেশ সেগুলোর অন্যতম।

 

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মন্ত্রীরা এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব এবং ভারতের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেছেন।

এসব কিছুর পাশাপাশি চীন ও ইইউ চীনা গাড়ি থেকে ইউরোপীয় শুল্ক প্রত্যাহার নিয়েও কথা বলছে বলে জানা গেছে। শোনা যাচ্ছে, শুল্কের পরিবর্তে চীন থেকে ইইউতে রপ্তানি করা গাড়িতে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হতে পারে। সংক্ষেপে বললে, আপনি যেদিকেই তাকাবেন, দেখবেন চীনের হাতে অনেকগুলো বিকল্প আছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই পরাশক্তির পাল্টাপাল্টি শুল্ক এখন প্রায় অর্থহীন হয়ে পড়েছে। কারণ, তারা এরই মধ্যে নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্যের বেশির ভাগ অংশ ছেঁটে ফেলার সীমা অতিক্রম করেছে।

এ পরিস্থিতিতে উভয় দেশের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ অনেক বেশি প্রতীকী বিষয়ে পরিণত হয়েছে।চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চেয়ারম্যান মাওয়ের ছবি পোস্ট করেছেন। এসব পোস্টে কোরিয়া যুদ্ধের সময়কার একটি ভিডিও রয়েছে। এই ভিডিওতে মাও সে–তুং যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেন, এই যুদ্ধ যত দিন ধরেই চলুক না কেন, আমরা কখনোই নতিস্বীকার করব না।

এসব কিছুর পাশাপাশি মাও নিং নিজে এক মন্তব্যে লিখেছেন, ‘আমরা চায়নিজ। আমরা উসকানিকে ভয় পাই না। আমরা পিছু হটব না। চীন সরকার যখন কোনো বিষয়ে চেয়ারম্যান মাওকে সামনে নিয়ে আসে, তখন ধরে নিতে হবে তাঁরা বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।