অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনের উদ্যোগ ও গুমের ঘটনায় নিয়ে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র
- By Jamini Roy --
- 19 December, 2024
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ ঘোষণার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আলোচনা উঠে এসেছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের যে ঘোষণা দিয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। এতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজনের সময় নির্ধারণ এবং প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানায়।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের গুমের ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে প্যাটেল বলেন, “গত দুই দশকে বাংলাদেশে শত শত মানুষ জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।” তিনি গুমের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বলেন, এই অপরাধের কারণে পরিবারগুলোকে মানসিক যন্ত্রণা এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্যাটেল উল্লেখ করেন, গুমের ঘটনাগুলো তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ভেদান্ত প্যাটেল। তিনি বলেন, “এ ধরনের অপরাধের দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেয়। একইসঙ্গে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষত গুমের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাযথভাবে পরিচালিত হলে এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। তবে এ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ এবং সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।