Logo

আন্তর্জাতিক    >>   সিরিয়ার সামরিক ইউনিট বিলুপ্তি ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ

সিরিয়ার সামরিক ইউনিট বিলুপ্তি ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ

সিরিয়ার সামরিক ইউনিট বিলুপ্তি ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ

সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সামরিক কমান্ডার মরহাফ আবু কাসরা, যিনি আবু হাসান আল-হামাওয়ি নামেও পরিচিত, ঘোষণা দিয়েছেন যে দেশটির সকল সামরিক ইউনিট ভেঙে দিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অধীনে একীভূত করা হবে। এএফপিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা আমাদের সশস্ত্র শাখাগুলো বিলুপ্ত করে একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অধীনে আনবো। আমাদের লক্ষ্য একটি ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ সিরিয়া।”

আবু কাসরা আরও বলেন, সিরিয়ার কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোও এই নতুন রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অধীনে অন্তর্ভুক্ত হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “কুর্দি জনগণ সিরিয়ার জনগণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমরা কখনো সিরিয়াকে বিভক্ত হতে দেব না। কোনো ফেডারেল সত্ত্বা থাকবে না।”

বর্তমানে সিরিয়ার উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অংশ কুর্দি নেতৃত্বাধীন। এই এলাকাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে পরিচালিত হলেও সম্প্রতি তুরস্ক-সমর্থিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে কুর্দিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তুর্কি বিদ্রোহীরা বেশ কিছু কুর্দি শহর দখল করে নিয়েছে।

আবু কাসরা ইসরায়েলের হামলাকে অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন। দক্ষিণ সিরিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা এবং তাদের অনুপ্রবেশ নিয়ে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও সার্বভৌম সিরিয়া চাই।”

উল্লেখ্য, বাশার আল আসাদের শাসনের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক স্থাপনায় শতাধিক হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, এসব হামলার উদ্দেশ্য শত্রু পক্ষের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা।

আবু কাসরা পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং এর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির (বর্তমানে আহমেদ আল-শারাআ) ওপর থেকে সন্ত্রাসী সংগঠনের খেতাব তুলে নেওয়া হোক। তিনি বলেন, “এইচটিএস একটি জাতীয় সংগঠন এবং এটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করতে প্রস্তুত। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাই, তারা যেন এই দলটিকে সন্ত্রাসী খেতাব থেকে মুক্ত করে।”

অতীতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত এইচটিএস সম্প্রতি তাদের অবস্থানে পরিবর্তন এনেছে। সংগঠনটি এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করছে যে, তারা ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

সিরিয়ায় সামরিক ইউনিট বিলুপ্তি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে একীভূত হওয়ার এই পদক্ষেপ দেশটিকে একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সিরিয়ার নেতারা আহ্বান জানাচ্ছেন, তারা যেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে এবং সন্ত্রাসী খেতাব তুলে নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করে।