Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ইসরায়েলকে সহায়তা বন্ধে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে মামলা

ইসরায়েলকে সহায়তা বন্ধে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে মামলা

ইসরায়েলকে সহায়তা বন্ধে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে মামলা

ইসরায়েলের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন পাঁচ ফিলিস্তিনি। তারা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ইউনিটগুলোকে সহায়তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করেছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) গাজা, অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা এই মামলাটি দায়ের করেন। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক ইউনিটগুলো বিচার বহির্ভূত হত্যা, অত্যাচার, নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এরপরও তাদের তহবিল এবং সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যা মার্কিন আইন বিশেষত ‘লেহি আইন’ অনুসারে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

‘লেহি আইন’ অনুযায়ী, মার্কিন সহায়তা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে মানবাধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল হতে হয়। কিন্তু গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী একের পর এক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই আইন প্রয়োগ করে ইসরায়েলের সামরিক ইউনিটগুলোকে সহায়তা বন্ধ করার সুযোগ থাকলেও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর তা করেনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এরই মধ্যে গাজায় ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষাধিক আহত হয়েছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে।

মামলার বাদীদের মধ্যে একজন পেশায় শিক্ষক, যিনি নিজেকে আমাল গাজা নামে পরিচয় দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি সাতবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তার পরিবারের ২০ সদস্য ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার কষ্ট এবং পরিবারের এই অকল্পনীয় ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে, যদি যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ইসরায়েলি ইউনিটগুলোর কাছে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে।”

মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিচারাধীন মামলা নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেন না।

ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনিরা নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন। ঘরবাড়ি ধ্বংস, বাস্তুচ্যুত হওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের হারানোর মতো ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন গাজাবাসী।

ইসরায়েলের এই আগ্রাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ফিলিস্তিনিদের দাবি, ইসরায়েলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ করা হলে তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এই মামলার ফলাফল শুধু ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার নীতিমালা ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।