Logo

রাজনীতি    >>   ওবায়দুল কাদের কীভাবে দেশ ছাড়লেন ট্রাইব্যুনালের ব্যাখ্যা দাবি

ওবায়দুল কাদের কীভাবে দেশ ছাড়লেন ট্রাইব্যুনালের ব্যাখ্যা দাবি

ওবায়দুল কাদের কীভাবে দেশ ছাড়লেন ট্রাইব্যুনালের ব্যাখ্যা দাবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দেশত্যাগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) কে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাস অর্থাৎ ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউটরদের মতে, এই মামলাগুলোতে শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর জানান, গুম কমিশনের দেয়া রিপোর্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এবং তিনি এ ধরনের অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে জারি করা রেড নোটিশের অগ্রগতির বিষয়েও আইজিপিকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ মোট ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। এ মামলার তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, এই গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত মাসেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল। মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু এবং কামরুল ইসলাম।

এছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছেন সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

গত ১৭ অক্টোবর ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

পরে, ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি এবং এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়। সেই নির্দেশ অনুসারে ১৮ নভেম্বর ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা সরকার ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায়। এর মধ্যে হত্যার নির্দেশদাতা এবং পরিকল্পনাকারী হিসেবে শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়। ৫ আগস্ট এই সরকার পতন ঘটলে ছাত্র-জনতার দাবির মুখে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জানায়, ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যাসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গুরুতর অপরাধ সংঘটিত করেছে। এই ঘটনায় যুক্ত থাকা সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।