Logo

অর্থনীতি    >>   আয় বৈষম্য নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আয় বৈষম্য নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আয় বৈষম্য নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বিনিয়োগের ঘাটতি বর্তমানে বাংলাদেশে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বিআইডিএস (বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান) আয়োজিত এবিসিডি সম্মেলনের প্রথম সেশনে বিশেষজ্ঞরা এসব বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করেন।

সম্মেলনে অংশ নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, অর্থনৈতিক ও আয় বৈষম্য এখন বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। তিনি বলেন, “বৈষম্য দূর করতে মানসম্পন্ন শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক দূরে রয়েছে।”

ড. ওয়াহিদউদ্দিন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। মানসম্মত শিক্ষা এবং দক্ষতার উন্নয়ন ছাড়া আয় বৈষম্য দূর করা কঠিন। তিনি বলেন, "শিক্ষার গুণগত মান উন্নত না হলে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারব না।"

সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত এস গিল বলেন, "বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে বের হতে হলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।" তিনি জোর দেন এমন একটি অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরির উপর, যেখানে উদ্যোক্তারা সহজেই গড়ে উঠতে পারেন এবং প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

ইন্দরমিত আরও বলেন, "বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কৌশলী হতে হবে। আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং সেবার মান উন্নয়ন করতে হবে।"

সম্মেলনে জ্বালানি খাতে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনায় উঠে আসে ভবিষ্যৎ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য স্বল্প, মধ্যম, এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা। বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশে টেকসই শিল্পায়ন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "বাংলাদেশ এখন আর স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকার সুযোগ পাবে না। তবে উন্নত দেশ হিসেবে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।"

সম্মেলনে বক্তারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণের জন্য রাজনৈতিক স্থিরতা অপরিহার্য।

সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা একমত যে, বৈষম্য দূর করতে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে মানসম্পন্ন শিক্ষা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করাও জরুরি। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় এসব পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।