Logo

আন্তর্জাতিক    >>   মুইজ্জুর ভারত সফরের গুরুত্ব: নতুন সম্পর্ক ও কৌশলগত সহযোগিতার সম্ভাবনা!

মুইজ্জুর ভারত সফরের গুরুত্ব: নতুন সম্পর্ক ও কৌশলগত সহযোগিতার সম্ভাবনা!

মুইজ্জুর ভারত সফরের গুরুত্ব: নতুন সম্পর্ক ও কৌশলগত সহযোগিতার সম্ভাবনা!

আজ (রোববার) পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। গত বছর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তাঁর প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফর। এই সফরের প্রেক্ষাপটে মুইজ্জু ভারতের কাছে তাঁর দেশের জন্য ‘বেল আউট’ চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ মালদ্বীপ বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে এবং দেশটি ঋণখেলাপি হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

‘বেল আউট’ হচ্ছে রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একটি দেশকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, যখন সেটি দেনার দায়ে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে থাকে। মুইজ্জু নির্বাচনী প্রচারে ভারতীয় প্রভাব কমানোর অঙ্গীকার করেছিলেন, যার মধ্যে ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতি প্রধান ছিল।

মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফর মালদ্বীপের বড় প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রতি তাঁর দেশের নির্ভরশীলতার প্রতিফলন। মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেড় মাসের আমদানির খরচ মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডি’স মালদ্বীপের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছে এবং জানিয়েছে, দেশটির ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভারতের ‘বেল আউট’ মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে পারে।

মুইজ্জু ইতোমধ্যে তুরস্ক ও চীন সফর করেছেন। গত জানুয়ারিতে চীন সফরটি নয়াদিল্লির প্রতি কূটনৈতিক অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ সাধারণত মালদ্বীপের নির্বাচিত নেতারা তাদের প্রথম বিদেশ সফরের জন্য ভারতকে বেছে নেন। নির্বাচনের পর মালদ্বীপের কর্মকর্তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যও করেন, যা ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।মুইজ্জুর সফরের আগে মালদ্বীপের দুই জুনিয়র মন্ত্রী, যারা একসময় মোদিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন, পদত্যাগ করেছেন।

ভারত মহাসাগরের প্রায় ১,২০০টি প্রবালদ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার। এই দ্বীপরাষ্ট্রটি খাদ্য, অবকাঠামো নির্মাণ ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যাপকভাবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। তাই মুইজ্জুর ভারত সফর কেবল অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য নয়, বরং কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মুইজ্জুর এই সফর নতুন একটি অধ্যায় উন্মোচন করতে পারে মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যে, যেখানে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।