চট্টগ্রাম বন্দরের রেকর্ড হ্যান্ডলিং
- By Jamini Roy --
- 11 December, 2024
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও কনটেইনার ও কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে নতুন রেকর্ড গড়তে চলেছে চট্টগ্রাম বন্দর। বছরের শেষ দিকে সরকারের এলসি খোলার বিধিনিষেধ শিথিল করার ফলে কাঁচামাল আমদানি এবং রফতানি উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩২ লাখের বেশি কনটেইনার এবং ১২ কোটি মেট্রিক টনেরও বেশি কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চলেছে।
২০২৩ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন এবং সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ বন্যা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তিন মাস ধরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। ডেলিভারি কার্যক্রম শূন্যের কোটায় পৌঁছায়। এরপরেও বছরের শেষ প্রান্তে বন্দর কার্যক্রমে ধীরে ধীরে গতি ফিরে আসে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দরটি ৩০ লাখ ৭০ হাজার কনটেইনার এবং ১১ কোটি ৪৫ লাখ মেট্রিক টন কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে। গত বছরের তুলনায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও কার্গো পণ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দর সর্বশেষ ৩২ লাখ কনটেইনার এবং ১১ কোটি ৬৬ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করেছিল। তবে ডলার সংকটের কারণে গত দুই বছর এই প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি ডলার সংকটের সমাধান এবং এলসি খোলার বিধিনিষেধ কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নতুন গতি এসেছে। বড় আকারের জাহাজে একসঙ্গে অনেক বেশি কনটেইনার পরিবহন করার কারণে জাহাজ আগমনের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও আমদানি-রফতানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, “বড় আকৃতির জাহাজ আসার কারণে জাহাজের সংখ্যা কমছে, তবে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়ছে। ডলার সংকট কমে যাওয়ার ফলে বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।”
আন্তর্জাতিক শিপিং ম্যাগাজিন লয়েড'স লিস্ট অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ ব্যস্ততম বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে ৬৭তম অবস্থানে রয়েছে। তবে বিগত তিন বছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কম হওয়ার কারণে এই তালিকায় বন্দরটি ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছিল। এ বছর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অগ্রগতির ফলে ভবিষ্যতে এ অবস্থান উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে বর্তমান উন্নতি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বৈশ্বিক সংকট এবং স্থানীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে এই অর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।