Logo

অর্থনীতি    >>   ভ্যাট আদায় বাড়াতে রেট কমানোর পরামর্শ, এনবিআরের মত ভিন্ন

ভ্যাট আদায় বাড়াতে রেট কমানোর পরামর্শ, এনবিআরের মত ভিন্ন

ভ্যাট আদায় বাড়াতে রেট কমানোর পরামর্শ, এনবিআরের মত ভিন্ন

ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য রেট কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক হাফিজুর রহমান। তবে ভ্যাট কমানোর বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব বিষয় উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, ভ্যাটের হার কমিয়ে ক্ষেত্র বাড়ানো উচিত। তার মতে, ভ্যাট হার কমানো হলে বেশি সংখ্যক মানুষ এতে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ভ্যাট ফাঁকির প্রবণতাও হ্রাস পাবে। ভ্যাট কালচার এবং ভ্যাট দেয়ার মানসিকতা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, “ভ্যাটের রেট কমালে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্যাট দেয়ার প্রতি উৎসাহ তৈরি হবে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে সবার জন্য এটি সহজলভ্য করা এবং প্রচলিত ভ্যাট নীতির সংস্কার করা।”

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এ প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে ভ্যাটের হার কমানোর কোনো সুযোগ নেই। তবে ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব। দেশের উন্নয়নে রাজস্ব আহরণের বিকল্প নেই। অটোমেশনের মাধ্যমে ভ্যাট ব্যবস্থা সহজ করার কাজ চলছে, যাতে জনগণ ঘরে বসেই কর দিতে পারেন।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, জনগণ ভ্যাট পরিশোধ করলেও অনেক ব্যবসায়ী সেই ভ্যাট যথাযথভাবে জমা দেন না। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এনবিআরকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার কর জাল সম্প্রসারণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “ভ্যাট-ট্যাক্স দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে। এনবিআরের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।”

তিনি জানান, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এনবিআরের দায়িত্ব হওয়া উচিত। অর্থ বিভাগ এই লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার ক্ষমতা রাখে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, “ঋণের বোঝা কমাতে হলে ভ্যাট এবং ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এতে দেশের পরবর্তী প্রজন্মের উপর ঋণের চাপ কমবে। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বড় ভূমিকা পালন করছে। এই খাতকে আরও উৎসাহিত করতে হবে।”

অন্যদিকে, রাষ্ট্র সংস্কার এবং দুর্নীতি দমনে ১৮ কোটি মানুষের সমন্বিত ভূমিকার ওপর জোর দেন তিনি। তার মতে, দেশের জনগণ সচেতন হলে দুর্নীতির শিকড় তুলে ফেলা সম্ভব।

আলোচনা সভায় রাজস্ব সংগ্রহে কর সংস্কার এবং অটোমেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি ভ্যাট কালচার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। যদিও ভ্যাট রেট কমানো নিয়ে মতভেদ রয়েছে, তবে সকলের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।