সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ৮ দফা দাবিতে সনাতনী জাগরণ জোটের বিবৃতি
- By Jamini Roy --
- 06 December, 2024
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট ৫ ডিসেম্বর একটি বিবৃতিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে তাদের ৮ দফা দাবির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। সংগঠনটি গত ৫ আগস্ট থেকে দেশে ঘটে যাওয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে। বিশেষ করে, "ধর্ম অবমাননার" অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তথ্য ও মামলা সংক্রান্ত নথি চেয়ে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের ইমেইলে (bsjji108@gmail.com) পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার না করে বর্তমান সরকারও অতীতের মতো এসব ঘটনাকে "বানোয়াট ও গল্প" হিসেবে প্রত্যাখ্যান করছে। জোটের নেতারা প্রশ্ন তোলেন, "যদি সংখ্যালঘু নির্যাতন না হয়, তাহলে ৮ দফা মেনে নিতে অসুবিধা কোথায়? কেন সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করে অতীতের ঘটনাগুলো তদন্ত করা যাবে না?"
২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ড্ররীক ধাম ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন, ২৬ নভেম্বর, তাকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হলে জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে তার মুক্তির দাবিতে শুরু হয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ। তবে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং লাঠিচার্জের ফলে প্রায় ৭০০ জন আহত হন, যার মধ্যে ৮৭ জন গুরুতর। চিন্ময়ের সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েক হাজার মানুষকেও আসামি করা হয়েছে।
২৬ নভেম্বর আদালত চত্বরে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। জোটের নেতারা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা অনুতপ্ত, কারণ সনাতনীরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।"
তারা আরও অভিযোগ করেন যে, এ ঘটনার পরও প্রশাসন সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। ঘটনার রাতে চট্টগ্রামের সেবক কলোনিতে ১০০টিরও বেশি হিন্দু বাড়িঘর এবং ৪টি মন্দিরে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে মা শীতলা মন্দির ও মা মনসা মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।
জোটের ৮ দফা দাবির মধ্যে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। তারা বলেন, "আমরাও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাই। সনাতনীরা মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে। তাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে।"
জোটের নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, "আমাদের দাবিগুলো মানলে আমরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে দেব। তবে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় স্পষ্ট পদক্ষেপ চাই।"
বিবৃতিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য দেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।