খুলনা-ঢাকা পথে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ চালু, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ খরচ
- By Jamini Roy --
- 22 October, 2024
খুলনা-ঢাকা পথে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য আজ মঙ্গলবার থেকে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’ চালু হয়েছে। সপ্তাহে এক দিন চলবে এই বিশেষ ট্রেন। খুলনা স্টেশনে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) মুখ্য বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। খুলনা থেকে যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, ভেড়ামারা হয়ে এই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাতে ১০ ঘণ্টা সময় নেবে।
ট্রেনটিতে সাতটি বগি রয়েছে, যার মধ্যে একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ও ছয়টি সাধারণ বগি। বগিগুলোতে সবজি, ফল, এবং রেফ্রিজারেটেড বগিতে হিমায়িত মাছ, মাংস ও দুধ পরিবহন করা যাবে। সবজিমালিকদের বিনা ভাড়ায় ঢাকায় যাওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে।
কৃষিপণ্যের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজিতে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১ টাকা ৪৭ পয়সা। যশোর থেকে ১ টাকা ৩৫ পয়সা এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে ১ টাকা ৩০ পয়সা।
তবে যশোরের ব্যবসায়ীরা ট্রেনে পণ্য পরিবহন নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তাঁদের দাবি, ট্রাকে যশোর থেকে ঢাকায় সবজি পাঠাতে প্রতি কেজিতে ২ টাকা খরচ হয়, যেখানে ট্রেনে খরচ হবে সাড়ে চার টাকা। এ ছাড়া বারবার সবজি ওঠা-নামানোর ফলে পণ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যশোরের বারীনগর সবজি মোকামের ব্যবসায়ী আন্তার আলী বলেন, “ট্রেনে সবজি পাঠানো সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাপেক্ষ হবে।”
চুয়াডাঙ্গার কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যেও এই ট্রেন সাড়া ফেলতে পারেনি। উদ্বোধনের দিন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে মাত্র একজন ব্যবসায়ী ট্রেনে ৬০ কেজি সবজি বুক করেন। তবে তিনি তা ঢাকায় না নিয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নামান।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ট্রেনের ভাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তবে এই ট্রেন খুলনা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার স্টেশনসংলগ্ন মোকামগুলোর ব্যবসায়ীদের জন্য কার্যকর হতে পারে।
ট্রেনের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে রিসোর নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, "কৃষকদের জন্য এই বিশেষ সেবা চালু হলেও প্রচারের অভাবে সাড়া কম পাওয়া যাচ্ছে।" তিনি আরও জানান, পরিবহন খরচ কমাতে একটি নীতিমালা দরকার, যাতে কুলি খরচ নির্ধারণ করা হয় এবং অনলাইনে বুকিং ও বাতিলের সুযোগ রাখা হয়।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশনমাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, ট্রেনটি চালু করতে মাইকিং করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এক দিন চললেও চাহিদা অনুযায়ী সপ্তাহের সাত দিন এই বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।