সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা

সিরিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটিতে এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু হয়েছে। সাবেক বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল শারাকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই খবর নিশ্চিত করেছে।

নতুন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর আহমেদ আল শারা একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করেছেন এবং আগামীতে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের আগ পর্যন্ত এই সরকার দেশ পরিচালনা করবে।

আহমেদ আল শারা ছিলেন সিরিয়ার বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) এর নেতা। গত মাসে এইচটিএস বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে সিরিয়ার সামরিক অভিযানে বাশার আল আসাদের সরকারকে উৎখাত করা হয়। বিদ্রোহীদের এই বিজয়ের পর থেকে এইচটিএস কার্যত সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।

গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দামেস্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সাবেক বিদ্রোহী কমান্ডাররা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রীরা মিলিত হন। এই বৈঠকে আহমেদ আল শারাকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয় এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়:

১. বাশার আল আসাদের বাথ পার্টি বিলুপ্ত ঘোষণা

২. সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থা ভেঙে দেওয়া

৩. স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা

৪. এইচটিএসসহ বিদ্যমান সশস্ত্র দলগুলো বিলুপ্ত করার ঘোষণা

আহমেদ আল শরা সিরিয়ায় একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করেছেন। তার পরিকল্পনায় রয়েছে:

- একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন

- অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন

- চার বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচন

- একটি একক জাতীয় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী গঠন

এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একে অপরের সঙ্গে মতাদর্শগতভাবে ভিন্ন এবং প্রতিটি গোষ্ঠীর নিজস্ব নেতা ও লক্ষ্য রয়েছে।

সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলেও দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজন এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে, বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করে একটি একক সরকার ও সেনাবাহিনী গঠন করা কঠিন হতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং কূটনৈতিক উদ্যোগ না থাকলে সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসা কঠিন হবে। তবে, দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের পর এই নতুন সরকার একটি নতুন আশার আলো জ্বালাতে পারে।