ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি: চীনা পণ্য ও বাণিজ্য উত্তেজনার পুনরাবৃত্তি
- By Jamini Roy --
- 22 January, 2025
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। হোয়াইট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “১ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ভাবছি।”
বাণিজ্য উত্তেজনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, “আমদানি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সম্ভব। তবে এটি কেবল বাণিজ্য বৈষম্যের সমাধান করার জন্যই করা হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, চীন থেকে ব্যথানাশক ফেন্টানিলের রাসায়নিক উপাদান মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। অতিমাত্রায় ফেন্টানিল সেবনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
এ কারণেই চীনের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের প্রবাহ কমানোর পরিকল্পনা করছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি আরও কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, যা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
শুধু চীনা পণ্য নয়, মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যের ওপরও ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছিল, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই এই শুল্ক আরোপ করতে পারেন তিনি। তবে সোমবার ওভাল অফিসে বসে তিনি শুল্ক আরোপ না করে, কোন কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে অন্যায্যতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ট্রাম্প মনে করেন, আমদানি পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে সমালোচকদের মতে, এই শুল্কের অতিরিক্ত ব্যয় শেষমেশ ভোক্তাদের ওপরই বর্তাবে।
ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্য থেকে রাজস্ব আহরণের জন্য একটি নতুন বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা করেছে। এই বিভাগের নাম হবে এক্সটার্নাল রেভিনিউ সার্ভিস। এই বিভাগের মাধ্যমে শুল্ক থেকে আয় বৃদ্ধি করার কৌশল নেয়া হবে।
বাণিজ্য উত্তেজনা নিয়ে চীন সরাসরি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করেই শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “চীন বাণিজ্য উত্তেজনার সমাধান খুঁজছে এবং আমদানি সম্প্রসারণে পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
চীন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতা খুঁজতে উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একদিকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এর মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠতে পারে।
চীন, মেক্সিকো, ও কানাডার মতো দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়তে থাকলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।