লেবাননের সংকট উত্তরণে ফ্রান্সের সমর্থন, ম্যাক্রোঁর দৃঢ় বার্তা
- By Jamini Roy --
- 18 January, 2025
লেবানন বর্তমানে সংকট উত্তরণের এক নতুন অধ্যায়ের দিকে এগোচ্ছে। হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং লেবাননে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এই প্রক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) লেবাননের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বৈঠকে লেবাননে ইসরাইলি হামলা, দেশটির সার্বভৌমত্ব রক্ষা, এবং দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হয়।
ম্যাক্রোঁ বলেন, "ফ্রান্স চায় ইসরাইল দ্রুত লেবানন থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করুক। আমরা লেবাননের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়ভাবে পাশে আছি।" তিনি আরও বলেন, "লেবাননের পশ্চিম সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনী সরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লেবাননের সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি এবং তাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা একান্ত প্রয়োজন।"
ফ্রান্স-লেবাননের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ম্যাক্রোঁ বলেন, "ফ্রান্স লেবাননের নতুন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশকে পুনর্গঠনে আমরা পাশে থাকব।"
লেবানন সফরে এসেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার তিনি লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর (ইউএনআইএফআইএল) সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবস্থান পরিদর্শন করে তাদের কাজের প্রশংসা করেন গুতেরেস।
তিনি বলেন, "ইসরাইলের টানা হামলার মুখে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সাহসিকতা অনুকরণীয়। তারা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।"
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবস্থান নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ম্যাক্রোঁর মতে, লেবাননের সেনাবাহিনীই দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে বড় শক্তি। এ কারণে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফ্রান্স সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপস্থিতি লেবাননের সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন আরও সুদৃঢ় করেছে।
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে লেবানন এখন নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ফ্রান্স এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সমর্থন এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তবে দেশের ভেতরে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে লেবানন সরকার এবং রাজনৈতিক নেতাদের একতাবদ্ধভাবে কাজ করার প্রয়োজন।
ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সফর এবং তার দেওয়া বার্তা লেবাননকে সংকট উত্তরণে অনুপ্রাণিত করেছে। অন্যদিকে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি দক্ষিণ লেবাননে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ধরে রাখতে সহায়তা করছে। আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে লেবানন আবারও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যেতে পারবে বলে আশাবাদী দেশটির জনগণ।