আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন
- By Jamini Roy --
- 13 November, 2024
বিদ্যুৎ খাতের একটি বিতর্কিত চুক্তি বাতিলের জন্য বাংলাদেশে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর, ভারতের আদানি গ্রুপের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিলের জন্য সরকারের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। তবে, নোটিশের পর তিন দিনের মধ্যে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায়, ১৩ নভেম্বর এই চুক্তি বাতিলের জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনটি ব্যারিস্টার এম কাইয়ুম জনস্বার্থে দায়ের করেছেন, যেখানে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি হিসেবে এই বিদ্যুৎ চুক্তির বাতিল দাবি করা হয়েছে।
২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করা হয়, যার মেয়াদ ২৫ বছর। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ঝাড়খণ্ডের আদানি গ্রুপের ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১২ টাকা (০.১০০৮ ডলার) দামে কিনছে, যা ভারতের অন্যান্য বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি।
চুক্তি বাতিলের জন্য, রিট আবেদনকারীরা সরকারের কাছে দাখিল করা নোটিশে দাবি করেছেন যে, এই একতরফা চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা বা বাতিল করা প্রয়োজন। রিট আবেদনটির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ১৩ নভেম্বর, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে।
এদিকে, এই চুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ উঠে এসেছে যে, আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে বাংলাদেশকে উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তাদের মতে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আদানির খরচ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে অনেক বেশি, যা দেশের অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষতিকর হতে পারে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা এবং দেশের স্বার্থরক্ষা নিয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ কমিটি বিদ্যুৎ খাতে বিদ্যমান চুক্তিগুলোর পর্যালোচনা করবে এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের দেওয়া নির্দেশনার আলোকে, এই চুক্তির বিস্তারিত তথ্য ও নথিপত্র সংগ্রহের কাজ চলছে, যার মধ্যে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব চুক্তির পুনর্বিবেচনা বা বাতিলের ফলে দেশের জনগণের জন্য সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যেতে পারে।
এছাড়া, চুক্তির স্বচ্ছতার অভাব ও দেশের স্বার্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি উঠেছে, যা পরবর্তীতে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করবে।