গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের তৃতীয় দিন, বকেয়া বেতনের দাবিতে অবরোধ
- By Jamini Roy --
- 11 November, 2024
গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। এই শ্রমিকরা গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না এবং কর্তৃপক্ষের বারবার আশ্বাসের পরও বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এর ফলে, সড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকে যানজট সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের জন্য চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, তাদের প্রায় তিন মাসের বেতন বাকি রয়েছে এবং তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন, কারণ অন্য কোনো উপায় তাদের হাতে ছিল না। বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা যখন পর্যন্ত তাদের বেতন পাবেন না, ততদিন পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। শ্রমিকরা তাদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, "ঘরভাড়া দিতে পারছি না, দোকানের সামনে বাকি টাকা চাইতে আসে, অথচ আমাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না।"
অবরোধের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে যাত্রী এবং চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক যাত্রী হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এবং অনেকে ট্রেন বা আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
শ্রমিকদের আন্দোলনের তৃতীয় দিনে গাজীপুর নগরীর কলম্বিয়া গার্মেন্টস এলাকা এবং মালেকের বাড়ি এলাকায় মহাসড়কের ওপর অবস্থান চলছে। শ্রমিকরা সড়কে বসে, স্লোগান দিয়ে এবং লাঠিসোঁটা হাতে আন্দোলন করছেন। পুলিশ এবং শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়নি।
শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু হয় শনিবার সকাল থেকে, যখন তারা তাদের বকেয়া বেতন দাবি নিয়ে সড়কে নামেন। গত দু'দিন ধরে তারা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরেও বেতন না পাওয়ায় অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আন্দোলন শুধু গাজীপুর শহরের সাধারণ জনগণের জন্য নয়, পুরো ঢাকার যানজট ব্যবস্থাকে কার্যত অচল করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজীপুরের মোগরখাল এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলসের ছয়টি কারখানার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক তিন মাস ধরে তাদের বেতন পাচ্ছেন না। বেতন পরিশোধের সময়সীমা কয়েকবার নির্ধারিত হলেও কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করেনি, ফলে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে এই দীর্ঘ আন্দোলনে নামেন। সরকারের কাছে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়ে শ্রমিকরা বলেন, “আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরা রাস্তায়ই থাকব।”
এদিকে, টিএনজেড গ্রুপের এই একমাত্র পোশাক কারখানা ছাড়া গাজীপুরের অন্যান্য সব পোশাক কারখানায় স্বাভাবিকভাবে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু মহাসড়ক অবরোধের কারণে পুরো শহরে যানজট ও দুর্ভোগ বেড়েছে। জনস্বার্থে শিগগিরই এই সমস্যা সমাধান করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।