
যুক্তরাজ্যের নিলামে টাইটানিকের চিঠি রেকর্ড দামে বিক্রি
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
টাইটানিক জাহাজডুবির কয়েক দিন আগে লেখা এক ঐতিহাসিক চিঠি যুক্তরাজ্যের এক নিলামে রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির লেখা এই চিঠিটি রোববার (২৭ এপ্রিল) যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারের বিখ্যাত নিলামঘর ‘হেনরি অ্যালড্রিজ অ্যান্ড সন’ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ক্রেতা ৩ লাখ পাউন্ডে কিনে নেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, চিঠিটির দাম ৬০ হাজার পাউন্ডের আশপাশে থাকবে। কিন্তু নিলামে এর মূল্য পাঁচগুণ বেড়ে যায়, যা টাইটানিক সংক্রান্ত কোনো চিঠির জন্য এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মূল্য। নিলাম পরিচালনাকারী জানিয়েছেন, টাইটানিকের ভেতরে বসে লেখা কোনো চিঠির জন্য এত উচ্চমূল্য এর আগে আর কখনো ওঠেনি।
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল লেখা এই চিঠিটি মূলত একটি ‘ভবিষ্যদ্বাণীমূলক’ পত্র। কর্নেল গ্রেসি তার এক পরিচিতজনকে লিখেছিলেন, টাইটানিক সম্পর্কে চূড়ান্ত মতামত দেওয়ার আগে তিনি তার যাত্রার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। সেই যাত্রা আর শেষ হয়নি। মাত্র পাঁচ দিন পর, ১৫ এপ্রিল টাইটানিক ডুবে যায় উত্তর আটলান্টিকে। কর্নেল গ্রেসি ছিলেন টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের একজন। তিনি কেবিন সি-৫১ থেকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন। পরে ১১ এপ্রিল টাইটানিক যখন আয়ারল্যান্ডের কুইন্সটাউনে (বর্তমানে কোব) নোঙর করেছিল, তখন চিঠিটি পোস্ট করা হয়। পরদিন, ১২ এপ্রিল লন্ডনে এর ডাক সিল মারা হয়।
টাইটানিক ট্র্যাজেডির অন্যতম জীবন্ত সাক্ষী ছিলেন গ্রেসি। দুর্ঘটনার পর তিনি ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’ নামে একটি বই লিখেছিলেন, যেখানে তিনি সেদিনের বিভীষিকাময় রাতের অভিজ্ঞতা বিশদভাবে বর্ণনা করেন। বইটিতে তিনি উল্লেখ করেন, কীভাবে বরফশীতল পানিতে উল্টে যাওয়া এক লাইফবোটের ওপর উঠে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে ওই লাইফবোটে থাকা বেশিরভাগ পুরুষ ঠান্ডা ও ক্লান্তিতে মারা যান।
কর্নেল গ্রেসি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরলেও হাইপোথারমিয়া ও অন্যান্য আঘাতে তার শরীর গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। জাহাজডুবির কয়েক মাস পর ১৯১২ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি কোমায় চলে যান ও দুদিন পর ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। সূত্র: বিবিসি