বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই: গভর্নর
- By Jamini Roy --
- 11 January, 2025
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মুনসুর জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে চার মাস চলার মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। তবে তিনি সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর জানান, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম-৬ অনুযায়ী এই পরিমাণ এখন ২ হাজার কোটি ডলারের মতো। গত ৮ জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলার।
তিনি বলেন, “রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মোট অর্থের ৮০ শতাংশ ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি অর্থ ফেরত আনতে মামলা চলমান রয়েছে। আশা করছি, মামলায় আমরা জয়ী হব।”
গত পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার এবং রফতানি আয় ২.৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে বলে গভর্নর জানান। তিনি বলেন, “প্রশিক্ষিত কর্মী বিদেশে পাঠানো গেলে রেমিট্যান্স আয় বছরে ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। এটি কোনো কঠিন কাজ নয়।”
তবে তিনি প্রবাসীদের সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানান। সৌদি আরবকে টপকে বর্তমানে দুবাই থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছে। এটি উদ্বেগজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। কারণ, সৌদি আরব থেকে অর্থ প্রথমে দুবাই যাচ্ছে, পরে সেখান থেকে বাংলাদেশে আসছে। দুবাইয়ের কিছু প্রতিষ্ঠান এই প্রক্রিয়ায় মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে কারসাজি করছে।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মুনসুর জানান, চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। এই অর্থ উদ্ধারে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ফলে অর্থ পাচার অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও রেমিট্যান্স প্রবাহ অতীতের তুলনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
গভর্নর বারবার সতর্ক থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “বর্তমানে চার মাস চলার মতো রিজার্ভ রয়েছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে। রেমিট্যান্স এবং রফতানি আয় বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।”
বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এমন আশাবাদী বার্তা দিয়ে গভর্নর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকার তাগিদ দিয়েছেন।