সৌদি আরব চাইলে এক নিমেষে থেমে যাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ট্রাম্প
- By Jamini Roy --
- 24 January, 2025
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, সৌদি আরব এক সিদ্ধান্ত নিলেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত সঙ্গে সঙ্গে থেমে যেতে পারে। তার মতে, তেলের দাম কমানোই যুদ্ধ বন্ধের মূল চাবিকাঠি। মধ্যপ্রাচ্যের তেল উৎপাদক দেশগুলো এখনো কেন এই পদক্ষেপ নেয়নি, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে চলমান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভায়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে এক ভাষণে ফোরামের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে এ বক্তব্য দেন।
ট্রাম্প বলেন, "তেলের দাম কমিয়ে দিলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হবে। সৌদি আরব এবং অন্যান্য তেল রফতানিকারক দেশগুলোর এটি অবিলম্বে করা উচিত। আমি সত্যিই অবাক যে, এতদিনেও এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।"
তিনি আরও জানান, তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই সৌদি আরবসহ তেল উৎপাদক দেশগুলোকে এই পদক্ষেপ নিতে হতো। ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন তেলের দাম দ্রুত কমায়।
ট্রাম্পের মতে, খনিজ তেলের বর্তমান উচ্চমূল্যই রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার কারণ। তিনি বলেন, "যতদিন তেলের দাম কমবে না, ততদিন এই সংঘাত চলতে থাকবে। যুদ্ধ বন্ধের জন্য অবশ্যই তেলের দাম কমানো প্রয়োজন।"
তিনি আরও বলেন, "তেলের দাম কমার পর আমি সুদের হারও কমানোর কথা বলব। কারণ বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, তার জন্য এসব দেশও অনেকাংশে দায়ী। এভাবে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।"
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে দুই পক্ষের হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং লক্ষাধিক মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে।
ক্ষমতার বাইরে থাকা সময় থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বারবার কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। তিনি প্রায়ই দাবি করেছেন, যদি তিনি ক্ষমতায় থাকতেন, তাহলে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধ বন্ধ করে দিতেন।
গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ক্ষমতায় ফিরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত সমাধানের জন্য তিনি জোরালো আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা চলছে। যদি যুদ্ধ বন্ধ না হয়, তবে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম কমানো কেবল অর্থনৈতিক নয়, বরং ভূরাজনৈতিক প্রভাবও ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, সৌদি আরব বা ওপেক এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়।