ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স: আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ শুনানি ১৩ ফেব্রুয়ারি
- By Jamini Roy --
- 23 January, 2025
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্বের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ শুনানি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ব্যারিস্টার নিহাদ কবির রিভিউ আবেদনে সওয়াল করেন। অন্যদিকে, রিভিউ আবেদনে পক্ষভুক্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম এবং ব্যারিস্টার এম. আবদুল কাইয়ূম।
রাষ্ট্রের পদমর্যাদাক্রম নিয়ে প্রথমবার ১৯৮৬ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী "ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স" প্রণয়ন করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর এটি কার্যকর হয়। তবে, এই প্রক্রিয়ায় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদধারীদের উপরে স্থান দেওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব মো. আতাউর রহমান এই পদমর্যাদাক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ৮ দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ঘোষণা করে।
রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় প্রদান করে। এতে হাইকোর্টের ৮ দফা নির্দেশনা কিছুটা সংশোধন করে তিন দফা নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়:
১. সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। ফলে প্রিসিডেন্সে সাংবিধানিক পদধারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
২. জেলা জজ এবং সমপদমর্যাদাসম্পন্নরা সরকারের সচিবদের সঙ্গে ১৬ নম্বর ক্রমিকে অবস্থান করবেন।
৩. অতিরিক্ত সচিবেরা জেলা জজদের পরে ১৭ নম্বর ক্রমিকে থাকবেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন রিভিউ আবেদন করে। রিভিউ আবেদনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরা পক্ষভুক্ত হন।
জুডিশিয়াল সার্ভিসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রায়ের কিছু দিক সাংবিধানিক পদধারীদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে না। তারা পদমর্যাদাক্রমে আরও স্পষ্ট নির্দেশনার দাবি জানায়।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি এই রিভিউ শুনানির ফলাফল রাষ্ট্রীয় প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। পদমর্যাদাক্রমের বিতর্ক সমাধানে এই শুনানিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স নিয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং প্রশাসনের মধ্যে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলমান। এই রিভিউ শুনানির মাধ্যমে বিষয়টির একটি চূড়ান্ত সমাধান আসতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।