Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ইসরাইলের সামরিক ব্যর্থতা : যুদ্ধবিরতি নিয়ে খলিল আল-হাইয়ার বক্তব্য

ইসরাইলের সামরিক ব্যর্থতা : যুদ্ধবিরতি নিয়ে খলিল আল-হাইয়ার বক্তব্য

ইসরাইলের সামরিক ব্যর্থতা : যুদ্ধবিরতি নিয়ে খলিল আল-হাইয়ার বক্তব্য

গাজায় ১৫ মাস ধরে চলমান সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে ইসরাইল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে হামাস তাদের শর্ত পূরণের দাবি করেছে, এবং ইসরাইলের সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছেন হামাসের সিনিয়র নেতা খলিল আল-হাইয়া।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিবৃতিতে খলিল আল-হাইয়া বলেন, “গাজার দুর্ভোগের জন্য ইসরাইলকে কখনো ক্ষমা করা হবে না। প্রতিটি রক্তের ফোঁটা ও প্রতিটি অশ্রু আমাদের বেদনার প্রতীক এবং আমরা তা ভুলব না।”

তিনি আরও দাবি করেন, “ইসরাইলি বাহিনী তাদের সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। গাজায় তাদের আক্রমণ শুধু মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, কিন্তু সামরিক কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেনি।”

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জত আল-রিশেক জানিয়েছেন, যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাস যে শর্তগুলো নির্ধারণ করেছিল, সেগুলো পূরণ করেই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তার দাবি, এই চুক্তি ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, গাজার বাস্তুচ্যুত জনগণের নিজ বাড়িতে ফেরার অধিকার এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পথ সুগম করেছে।

হামাসের ভাষায়, “এই যুদ্ধবিরতি আমাদের জনগণের অবিচল ধৈর্য্যের ফল। গাজার প্রতিরোধ ফিলিস্তিনিদের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।”

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে তিনটি দেশ—কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্র—গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।

চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি ১৯ জানুয়ারি রবিবার থেকে কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষরা অন্তর্ভুক্ত।

চুক্তির ধাপসমূহ

১. প্রথম ধাপ:
ইসরাইল গাজার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭০০ মিটার (২,২৯৭ ফুট) দূরে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে। গাজার উত্তরাঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের নিজেদের বাড়িতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে। প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ সরবরাহের অনুমতিও দেবে ইসরাইল।

২. দ্বিতীয় ধাপ:
ইসরাইলি কারাগারে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে অবশিষ্ট জীবিত জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে গাজার সম্পূর্ণ এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৩. তৃতীয় ধাপ:
হামাস এবং ইসরাইল উভয়ের নিহতদের মৃতদেহ প্রত্যাবর্তনের কাজ সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে, যা জাতিসংঘ, মিশর এবং কাতারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ইসরাইলের জন্য একটি বড় পরাজয়ের চিহ্ন হিসেবে দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘ সংঘর্ষের পরেও তারা হামাসের প্রতিরোধ ভাঙতে পারেনি। হামাসের দাবি করা এই শর্তগুলো তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে আরও সুদৃঢ় করেছে।

হামাসের মতে, এই যুদ্ধবিরতি ফিলিস্তিনিদের জন্য মুক্তির পথে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়ন নির্ভর করবে উভয় পক্ষের আন্তরিকতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকার উপর।





P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert