রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৪, মার্কিন সহায়তা বন্ধে সংকটে জেলেনস্কি
- By Jamini Roy --
- 31 January, 2025
ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার চালানো ড্রোন হামলায় ৪ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব হামলায় আবাসিক ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া ইরানি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে সুমিতে ৮১টি হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী পাল্টা হামলা চালিয়ে ৩৭টি রুশ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে। অন্যদিকে, রাশিয়া দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরেকটি বসতি দখলের ঘোষণা দিয়েছে।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমিতে রাশিয়ার ধারাবাহিক ড্রোন হামলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, শাহেদ ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে আবাসিক এলাকা ধ্বংস করেছে রাশিয়া।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলায় অন্তত ৪ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ২০টিরও বেশি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর।
একইদিন, দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি নতুন বসতি দখলের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কিয়েভের চাসভ ইয়ার শহরের বেশিরভাগ এলাকাই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। তবে রাশিয়া তার সামরিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে দোনেৎস্ক অঞ্চলে নতুন করে সেনা মোতায়েন করছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরপরই বিদেশি সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন।
ফলে, মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম সংকটে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে সাহায্যের জন্য ঝুঁকছেন।
ইউক্রেনীয় আইনপ্রণেতারা বলছেন, মার্কিন সহায়তা পুরোপুরি পুনরায় চালু হতে আরও ৬ মাস সময় লাগতে পারে। এই সময় ইউক্রেনের অর্থনীতি এবং সামরিক বাহিনী কীভাবে টিকে থাকবে, তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ওয়াশিংটনের বদলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আরও বেশি সহায়তা চেয়েছে ইউক্রেন। জেলেনস্কি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইইউ নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছেন এবং তাদের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, "আমরা পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তা ছাড়া এই যুদ্ধে টিকে থাকতে পারব না। রাশিয়া প্রতিনিয়ত আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে, আমাদের আরও সমর্থন দরকার।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ইউক্রেন আরও দুর্বল হয়ে পড়বে এবং রাশিয়া এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইবে। ইতোমধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনী তাদের আধিপত্য বাড়িয়েছে, যা ইউক্রেনের জন্য আরও বিপজ্জনক হতে পারে।