ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফ
- By Jamini Roy --
- 31 January, 2025
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নিশ্চিত করেছে যে, তাদের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হলেও এতদিন এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি হামাস। এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্টে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছিল যে, তারা আগের মাসে দেইফকে হত্যা করেছে। তবে তখন হামাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। অবশেষে হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে যে, দেইফ নিহত হয়েছেন।
মোহাম্মদ দেইফ ছিলেন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান। ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পরেই তিনি ছিলেন হামাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা।
ইসরাইলের দাবি, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন দেইফ। ওই হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকেই ইসরাইল দেইফকে তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।
দেইফ গাজায় হামাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কয়েক দশক ধরে তিনি ইসরাইলি বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন এবং তাকে হত্যা করতে বহুবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। দেইফের বেঁচে থাকার ইতিহাস রহস্যময়। কয়েকবার হামলায় গুরুতর আহত হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান, যার কারণে তাকে ‘নিছক ছায়া’ বলে ডাকত ইসরাইলি গোয়েন্দারা।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মোহাম্মদ দেইফের পাশাপাশি সংগঠনটির উপ-সামরিক কমান্ডার মারওয়ান ইসাও নিহত হয়েছেন।
ইসাকে হামাসের সামরিক শাখার ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হত এবং ইসরাইলের মোস্ট-ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের একজন ছিলেন।
গত বছর মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র তার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছিল, তবে তখন হামাস এটি নিশ্চিত করেনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসাকে সন্ত্রাসী কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। ইসরাইলি গোয়েন্দারা মনে করে, ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন ইসা।
দেইফ ও ইসার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত বছর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
একই পরোয়ানায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের নামও ছিল।
গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বিপুলসংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনী দেইফ ও ইসাকে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখত। ফলে, তাদের হত্যাকে ইসরাইল বড় ধরনের সাফল্য হিসেবে দেখছে।
তবে হামাস এখনও প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে এবং বলছে, ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলবে।