টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের প্রতিক্রিয়া
- By Jamini Roy --
- 15 January, 2025
দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক অবশেষে পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) তার পদত্যাগের ঘোষণা আসে। তার এই পদত্যাগের বিষয়টি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, “জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “দুর্নীতির জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষমা চাওয়া উচিত। বাংলাদেশের অর্থ পাচার ও দুর্নীতির ফলে দেশের আর্থিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।”
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া রাশিয়ার সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়। এর পাশাপাশি বিরোধী দলগুলো তার বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি জানায়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ধারাবাহিকভাবে তার দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ বিলিয়ন ডলার অপব্যবহার নিয়ে তদন্ত চলছে। এই প্রকল্পে দুর্নীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের ফলে দেশে আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে।
সরকার আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহায়তায় পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রেস উইং থেকে বলা হয়, “যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম সরকার বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে এবং এই অপরাধের সুষ্ঠু বিচারে সহযোগিতা করবে।”
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে বিরোধী দলগুলোর চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকে।
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিক তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্লেখ করেন যে, “মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস আমার বিরুদ্ধে কোনো নিয়ম লঙ্ঘনের প্রমাণ পাননি।”