Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান

ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান

ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এক বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, মিশর ও জর্ডান প্রকাশ্যে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও শেষ পর্যন্ত তারা ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেবে।

ট্রাম্প বলেন,
"আমি শুনেছি, কেউ বলছে যে তারা এটা করবে না, কিন্তু আমার মনে হয় তারা করবে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে তারা করবে।"

এসময় তিনি ইঙ্গিত দেন, মিশর ও জর্ডানকে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে পারে। তবে এই প্রস্তাবকে 'জাতিগত নির্মূল' ও 'যুদ্ধাপরাধ' বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

ট্রাম্পের মতে, গাজার ধ্বংসস্তূপে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তর করাই একমাত্র সমাধান। তিনি বলেন,

"ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়া উচিত।"

এটি কি অস্থায়ী নাকি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটি যেকোনো কিছু হতে পারে। তবে তিনি বারবার এই পরিকল্পনার পক্ষে জোর দিয়ে বলেন, মিশর ও জর্ডানকে শেষ পর্যন্ত এটি মেনে নিতেই হবে।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মিশর ও জর্ডান।

মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
"ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধান হলো তাদের নিজেদের ভূমিতে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়া নয়।"

জর্ডানের সরকারও কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান,
"ফিলিস্তিনের মানুষ তাদের মাতৃভূমিতে থাকবে। আমাদের দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নয়।"

ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস।

গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস এক বিবৃতিতে জানায়,
"এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণকে চিরতরে গাজা থেকে উচ্ছেদ করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র। এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।"

আরব বিশ্ব ও মুসলিম দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া:

- সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ট্রাম্পের প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

- তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন,
"এই পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার অর্থ হলো ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব মুছে ফেলা।"

- ফ্রান্স ও জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নও ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শুধু কূটনৈতিক নয়, মিশরের জনগণের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

শুক্রবার রাফাহ সীমান্তে হাজারো মিশরীয় জড়ো হয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।

তারা বলেন,
"আমরা ফিলিস্তিনের মানুষকে সমর্থন করি, কিন্তু আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হতে দেব না। আমরা গাজা থেকে জোরপূর্বক ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর মেনে নেব না।"

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা কেবল ফিলিস্তিন নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

বিশ্লেষক ড. হাসান আল-কাসিম বলেন,
"ট্রাম্পের এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে তা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। এটি মূলত ইসরাইলকে সুবিধা দিতেই করা হয়েছে।"

ইউরোপীয় রাজনীতিবিদ জাঁ লুক মেলানশো এক বিবৃতিতে বলেন,
"এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এটি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটগুলোর একটি হবে।"

ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। মিশর ও জর্ডান নিজেদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে।

তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকটের সৃষ্টি হতে পারে।





বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert